অনলাইন আয়ের জগতে এসইও (SEO) একটি অনন্য নাম। SEO বলতে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনকে বোঝানো হয়ে থাকে। এটি শিখে বর্তমান সময় অনেকেই অজস্র পরিমাণ অর্থ আয় করছেন।
যুগোপযোগী অনলাইন আয়ের একটি মাধ্যম হচ্ছে Search Engine Optimization. এসইও ছাড়া একটি ওয়েবসাইট কল্পনা করা যায় না।
এসইও ফ্রেন্ডলী করে কোন পোস্ট লেখা হলে যেমন তা দ্রুত গুগলসহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স হয় তেমনি অধিক সংখ্যক পাঠক জেনারেট করতে এর জুড়ি মেলা ভার।
আপনি যদি ভালভাবে এসইও করতে চান তবে খুব কঠিন অধ্যবসায়ের মাধ্যমে শিখতে হবে। মনে রাখবেন নিজেকে কখনও মাস্টার হিসেবে প্রকাশ করবেন না।
বরং নিজেকে একজন ছাত্র হিসেবে গড়ে তুলুন। প্রতিনিয়ত প্র্যাকটিজ করতে থাকুন। হাল ছেড়ে দিবেন না। ধরে থাকুন।
আজ অথবা কাল আপনি সফল হবেনই। তাহলে চলুন দেখি কিভাবে এসইও করলে আসলে ভাল ফলাফল পাওয়া সম্ভব?
প্রথমে একটু জানা যাক, এসইও কি?
এসইও কি? (What is SEO?)
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি? এসইও এমন এক ধরণের কৌশল যার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট কিংবা ওয়েবসাইটের কোন পোস্ট সবার উপর এ চলে আসে।
যেমন, আপনি যদি কোন ব্রাউজারে গিয়ে লিখেন, এপিআই কি? তাহলে দ্বিতীয় নাম্বার যে ওয়েবসাইটটি চলে আসে তার নাম নিত্যটিউন।
আরো পড়ুনঃ SEO কিভাবে কাজ করে – এসইও শিখে কিভাবে আয় করবো?
এখানে যে কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে তাকেই এসইও বলা হয়। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পারছেন।
এসইও এর প্রকারভেদ
অনেক এসইও এক্সপার্ট SEO কে দুই ভাগে ভাগ করেছে।
- White Hat SEO (হোয়াইট হ্যাট এসইও)
- Black Hat SEO (ব্ল্যাক হ্যাট এসইও)
White Hat SEO (হোয়াইট হ্যাট এসইও)
সার্চ ইঞ্জিনের নিয়ম নীতি অনুসরণ করে যখন এসইও করা হয় তখন একে হোয়াই হ্যাট এসইও বলা হয়। এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব ভাল ফলাফল পাওয়া সম্ভব।
একটি সার্চ ইঞ্জিন যে সকল নিয়ম অনুসরণ করে সেগুলো দেখে যদি আপনি ওয়েবসাইটকে অপ্টিমাইজ করতে পারেন তবে আশা করা যায় আপনি খুব ভাল পরিমাণ ট্রাফিক অনলাইন থেকে পেয়ে যাবেন।
অপরদিকে,
Black Hat SEO (ব্ল্যাক হ্যাট এসইও)
এটি সার্চ ইঞ্জিনের সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ এখানে এসইও এর সকল নিয়ম নীতি মেনে কাজ করা হয় না। এখানে বিভিন্ন সফটওয়্যারের লিংক পোস্টের মাঝে যুক্ত করা হয়।
ঘন ঘন পোস্টের মাঝে লিংকগুলো জেনারেট করার কারণে অধিক সংখ্যক ট্রাফিক পাওয়া যায়। কেননা মানুষ এই ধরণের লিংকগুলোতে বেশি প্রবেশ করে।
আবার পোস্টের মাঝে কোন লোভলনীয় বিষয়ের লিংক যুক্ত করে দিলে মানুষ বেশি এট্রাক্টেড হয় আর বেশি পরিমাণ ট্রাফিক সেখানে পাওয়া যায়।
এই পদ্ধতি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও নামে পরিচিত।
গুগল কিন্তু বর্তমান সময় অত্যন্ত চালাক। এসব চালাকি আগে প্রচুর পরিমাণে চলত। দিনের পর দিন প্রযুক্তির উন্নয়ের সাথে সাথে এসব বদলে গেছে।
এখন ব্ল্যাক হ্যাট এসইও অনেক কঠিন। এই প্রসেস কাজে লাগাতে গিয়ে হিতের বিপরীতই হবার সম্ভাবনা বেশি।
তাই আমাদের এই বিষয়টি পরিহার করা উচিত।
টেকনিক্যাল এসইও
একটি ওয়েবসাইটের অর্গানিক র্যাংক বাড়ানোর জন্য যে টেকনিক্যাল জ্ঞান কাজে লাগানো হয় তাকে টেকনিক্যাল এসইও বলে।
এসইও এর ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটি কেন গুরুত্ব বহন করে দেখুন।
টেকনিক্যাল এসইও কেন দরকার?
Seo এর কাজ কি? একটি ওয়েবসাইটে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করানোর জন্য আপনাকে নিশ্চয় কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। কেননা আপনার ওয়েবসাইটটি যে অনলাইনে আছে সেটা কি সার্চ ইঞ্জিনকে জানাতে হবে কি না?
এখন এই যে প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সার্চ ইঞ্জিনকে বলে দিচ্ছেন যে আপনার সাইটটি অনলাইনে এন্ট্রি করা হয়েছে।
এই কৌশলটিই হচ্ছে টেকনিক্যাল এসইও।
সুতরাং এটি আপনার ওয়েবসাইটের পরিচিতি তৈরী করছে অর্থাৎ অস্তিত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছি। সুতরাং এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।
অনপেইজ এসইও
এটি মূলত একটি পোস্টের মাঝে করা হয়। পোস্টের মাঝে উপযুক্ত টাইটেল দেয়া। সুন্দর একটি কিওয়ার্ড দেয়া।
পোস্টের মাঝে বিভিন্ন হেডিং দেয়। ইন্টারনাল লিংক যুক্ত করা, মেটা ট্যাগ নিশ্চিত করা এসব মূলত অনপেইজ এসইও এর একটি অংশ।
অনপেইজ এসইও মূলত সব থেকে বেশি গুরুত্ব বহন করে।
তাছাড়াও যদি আমরা একটি ইকমার্স ওয়েবসাইটের বিষয়ে চিন্তা করে থাকি তবে এটি দ্রুত যাতে র্যাক করে তার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হয়।
আপনি আরো পড়তে পারেন,
ক্যারিয়ার হিসেবে ওয়েব ডিজাইন কিংবা ব্লগিং কোনটি?
এগুলো অনপেইজ এসইও এর মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হয়।
অফপেইজ এসইও
OFF Page SEO এমন একটি প্রক্রিয়া যাকে আমরা ওয়েবসাইটের বাহিরে করে থাকি। যেমন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট শেয়ার।
লিংক বিল্ডিং করা অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটের একজন আগন্তুক একটি লিংক ধরে অন্য কোথাও চলে গেলে একে ব্যাক লিংক বলা হচ্ছে।
আপনার ওয়েবসাইটের কোন লিংক যখন অন্য কোথাও শেয়ার করবেন তখন একে আমরা অফপেইজ এসইও বলে থাকি।
এসইও কেন করতে হয়?
এসইও করে আয় করা যায় কি? কেন করতে হয় এসইও? ধরুন, আপনার একটি মোবাইল ফোনের দোকান আছে। মানে আপনি একজন বিক্রেতা। এখন সর্বাধিক সংখ্যক ক্রেতার নিকট আপনার দোকানের তথ্য পৌঁছালেই তো আপনি বেশি পরিমাণ গ্রাহক পেতে পারেন।
তাই নয় কি?
যদি দোকান একটি লুকায়িত জায়গায় দেন। আর সেখানে সুন্দর করে একটি ব্যানার না ঝুলিয়ে দেন তবে কি আপনার দোকান সম্পর্কে মানুষ জানতে পারবে?
আর যদি সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ মানুষ না যায় আপনার মোবাইল কে কিনবে বলুন তো?
এখন যদি আপনি দোকানের জন্য সুন্দর করে একটি ব্যানার তৈরী করেন আর এমন একটি জায়গায় সেটি বসিয়ে দেন যেখানে পর্যাপ্ত মানুষের আনাগোনা।
আবার একইভাবে আপনি মাইকিং করে আপনার দোকানের প্রচার করলেন। এতে করে কি হল?
আপনার দোকানের পরিচিতি বাড়ল একইসাথে আপনি কিছু কাস্টমার পেয়ে যাবেন।
বিষয়টা তাই নয় কি ?
তাহলে আমাকে বলুন আপনি এত টাকা খরচ করে দোকান দিলেন তাহলে আবার প্রচারের জন্য বাড়তি খরচ কেন করলেন?
এটা এ কারণে যে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ সেল চাচ্ছেন। ঠিক একইভাবে একটি ওয়েবসাইট যখন নতুন চালু করা হয় তখন তার বিষয়ে খুব কম মানুষই জানতে পারে।
এখন আপনি যে বিষয়কে কেন্দ্র করে ওয়েবসাইট করলেন তা যদি মানুষের কাছে নাই পৌঁছায় তবে আপনি কি খুব বেশি পরিমাণ পাঠক পাবেন।
ধরুন একটি ইকমার্স ওয়েবসাইট নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিলেন। এখন সেটি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ মানুষের কাছে না পৌঁছায় আপনার পণ্য কে কিনবে বলুন তো?
এই যে এই পণ্যগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্যই কিন্তু আমাদের এসইও এর দরকার হচ্ছে।
যদি এসইও নামক কৌশলকে কাজে না লাগানো হয় তবে আপনার ওয়েবসাইট অন্যদের তুলনায় একেবারে পিছিয়ে থাকবে।
ফলে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ ট্রাফিক পাবেন। ফলে আপনার ব্যবসার ক্ষতি হয়ে যাবে। নিশ্চিত করে বলা যায়।
আশা করি বিষয়টি বুঝতে পারছেন।
এসইও কিভাবে করতে হয়?
মোবাইল দিয়ে এসইও করা কি সম্ভব?
আমরা তো উপরে জেনেই গেলাম যে এসইও দুই প্রকার। মানে আমরা কিন্তু এসইও দুই ভাবে করতে পারি।
তাহলে এসইও কিভাবে শিখবো? অনপেইজ এসইও আবার অফপেইজ এসইও।
অর্থাৎ অনলাইনকে কেন্দ্র করে আর অফলাইনকে কেন্দ্র করে দুই উপায়ে এসইও করা যায়।
পোস্টের মাঝে মেটা ট্যাগ, বিভিন্ন কিওয়ার্ডের সমন্বয়, উপযুক্ত টাইটেল প্রদান, স্লাগ দেয়, মেটা ডেসক্রিপশন, বিভিন্ন প্রকারের টাইটেল সাইজ দেয়া এগুলো অনপেইজ এসইও।
আরো পড়ুনঃ আর্টিকেল লিখে ৬০০০০+ টাকা আয় করার ওয়েব কম্বো প্যাক
আবার পোস্টের বাইরে অর্থাৎ ওয়েবসাইটের বিভিন্ন লিংক নানাবিধ সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা বিভিন্ন জনের কাছে পৌঁছে দেয়া।
এসব অফপেইজ এসইও।
পরিশেষে,
এটা বলা চলে যে একটি ওয়েবসাইট যখন তৈরী করবেন তখন আপনাকে অবশ্য অবশ্যই এসইও করতে হবে। এসইও ছাড়া একটি ওয়েবসাইট অস্তিত্বহীন।
এতক্ষনে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন এসইও ছাড়া একটি ওয়েবসাইট কল্পনা করা মুশকিল।
একটি ইকমার্স ওয়েবসাইটের সেল জেনারেট করা কখনই সম্ভব নয় যদি না আমরা এসইও এর গুরুত্ব দেই।
সুতরাং ভাল ফলাফলের জন্য আমাদের এসইও করতেই হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
তো বন্ধুরা সুন্দর করে এসইও করুন, ওয়েবসাইটের দ্রুত র্যাংক করান আর পেয়ে যান প্রচুর ট্রাফিক।
এই শুভ কামনায় আজকের মত বিদায় নিচ্ছি।
আল্লাহ হাফেজ।