এটা বলা হয়ে থাকে যে, কালোজিরা মৃত্যু ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ। আমরা জানি যে, নানান রকমের ভেষজের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের গুণাবলী রয়েছে। আজকে আমরা তেমনি একটি ভেষজ কালোজিরার জানা-অজানা গুণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।
শুধু মসলায় নয় বরং সব ভেষজের বস হচ্ছে কালোজিরা। মসলার সাথে কালোজিরার মিশিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
নিয়মিত খেলে অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচা যায়। কালোগিরা আমাদের অসংখ্য রোগের সাথে যুদ্ধ করে।
শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকারক উপাদান নষ্ট করে ফেলে। ফলে অনেক সমস্যার হাত থেকে আমরা বেঁচে যাই।
সুতরাং আপনাকে মধু কালোজিরার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে যা আপনার জন্য অত্যন্ত উপকারি হবে বলে মনে করা যেতে পারে।
কালোজিরা উদরাময়, কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়? এমন প্রশ্ন মনের মাঝে আসলেই ঝেড়ে ফেলুন, কেননা এর মাঝে গ্যাস বেশি হবার মত কোন উপাদানই নাই!
ফুসফুস জনিত বিভিন্ন রোগে প্রচুর উপকারে আসে। আমাদের অনেকেই কৃমির যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে যাই।
যাদের কৃমির সমস্যা আছে তারা নিয়মিত কালোজিরা সেবন করতে পারেন, কৃমির উপদ্রব কমে যায় এবং বিশেষভাবে উপকারে আসে।
অর্শ্ব রোগেও কালোজিরা সমান ভূমিকা রাখে বলে ইউনানী মতবাদে পাওয়া যায়। জন্ডিস যা আমাদের দেশে একটি জটিল টাইপের রোগ হিসেবে পরিগণিত হত।
আমরা এখন বিশদভাবে জানার চেষ্টা করবো, কালোজিরার গুণাগুণ সম্পর্কে
তার জন্যও এটি অনেক ভালমানের একটি ভেষজ।
তো বন্ধুরা অনেক কিছুই তো জানলাম, চলুন এবার কালোজিরার নানান উপকার সম্পর্কে ডিটেইলস এ জানার চেষ্টা করি।
গর্ভাশয়ের দ্বার সঙ্কোচন এ
কালোজিরা নিয়মিত খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। প্রসবের ঠিক পরে যদি কেউ এটি সেবন করে তবে গর্ভাষয়ের দ্বার সংকুচিত হয়ে যায় এবং স্তন্যের মাত্রা বেড়ে যায়।
সুতরাং সন্তান হবার পর ঐ সব মায়েদের নিয়মিত কালোজিরা খাওয়া উচিত।
গলা ফোলায়
সর্দি কাশির জন্য গ্লান্ড ফুলে গেলে কালোজিরা খেলে গলা ফোলা এবং ব্যাথা উভয়ই কমে যায় বলে জানা যায়।
যদি কোন সময় আপনার গলা ফুলে যায় তবে দেরি না করে কালোজিরা সেবন করুন। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আপনার গলা ব্যাথা কমে যাবে।
খুব বেশি পরিমান গলা ব্যাথা হলে ডাক্তারের সরণাপন্ন হন।
স্তন্যস্বল্পতায়
কারো যদি আমদোষ থেকে থাকে কিংবা শরীরের রসধাতু কমে যায় তবে রক্তস্বল্পতার দেখা মেলে। এক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ কালোজিরা গুড়ো করুন।
নিয়মিত দুধের সাথে মিশিয়ে সকাল বিকাল করে এক সপ্তাহ সেবন করুন। তবে অনেক ভাল উপকার পাবেন আশা করি।
স্তন্যস্বল্পতায় কালো জিরার বিশেষ গুণ রয়েছে। আমরা এখন কালোজিরার উপকারিতা অপকারিতা নিয়ে বাড়তি কিছু জ্ঞান আহরণ করবো।
দাদ এ
আমাদের মধ্যে যাদের দাদ রয়েছে তারা বুঝি যে এটা কতটা যন্ত্রণার। কারো যদি এমন দাদের কারণে অসহ্য চুলকানির দেখা হয়।
তবে এটি বেটে নিয়মিত প্রলেপ দিলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। দাদের মত যন্ত্রণায় কোন সময় ভুগে থাকলে কালোজিরা বেটে সেবন করুন।
দেখবেন দাদের যন্ত্রনা অনেকটা কমে গেছে।
মাসিক ঋতু
অনিয়মিত কিংবা অধিক স্রাবের জন্য কষ্ট হলে, ঋতু হওয়ার কমপক্ষে পাঁচ-সাত দিন আগে থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম হারে সামান্য গরম পানিসহ সকালে ও বিকেলে খেলে খুব ভাল উপকার পাওয়া যায়।
এটি অনেক মহিলার একটি জটিল সমস্যা হিসেবে দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে এরকম অনিয়মিত হতে হতে তার মাসিক অবস্থার অবসান ঘটে যায়।
ফলে ঐ মহিলা সন্তান ধারণের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তাই এরূপ ক্ষেত্রে নিয়মিত কালোজিরা সেবন করুন।
আপনি কি জানেন? কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা কি?
পড়তে থাকুন…
মাথায় যন্ত্রণা
কালিজিরার তেল খেলে কি হয়? কালোজিরার আরেকটি বিশেষ গুণ রয়েছে। কাঁচা সর্দির কারণে অনেক সময় আমরা মাথা ব্যাথা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ি।
তাহলে,
কালোজিরা তেলের উপকারিতা কি বুঝতে পারছেন?
আপনি কি কখনও এমন বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন? যখন প্রচন্ড মাথা ব্যাথা আপনাকে গ্রাস করেছে?
এমন অবস্থায় কালোজিরা বন্ধুর মত উপকার করে। মাথার অসহ্য যন্ত্রণায় কালোজিরা বিশেষ ফলদায়ক।
বাধক দোষ
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা বাধক দোষ অনেক মেয়েদের ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলে।
কেউ স্থুল হয় আবার কেউ শুকিয়ে যায়। দেহ ও মনের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে এই দোষ।
যদি কোন সময় আপনিও এমন সমস্যায় পড়ে থাকেন তবে আপনি নিয়মিত কালোজিরা সেবন করতে পারেন।
আশা করি আপনি অনেক উপকার পাবেন।
অনেকের কাম উন্মাদনা রোগ সৃষ্টি করে এটি। এটি দূর করার জন্য কালোজিরা সেবন করুন।
আবার অনেক মহিলার জননগ্রন্থির ক্রিয়াও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় কালোজিরা ভেজে গুঁড়ো করে নিয়মিত সকাল সন্ধায় প্রায় ৭০০ মিলিগ্রাম করে খেলে এই দোষ কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়।
চলুন এবার জেনে নেব চুলকানির ঔষধ হিসেবে কালোজিরা কতটা কাজের?
চুলকানি
কালোজিরা খেলে কি হয়? kalojirar gun দেখুন! যার চুলকানি হয়েছে সেই বোঝে কি যন্ত্রণা এতে। কবির ভাষায়, কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে, দংশেনী যারে কভু আশি বিষে!
আমার মনে হয় ছোটবেলায় এমন সমস্যা হয় নাই এরকম কোন পাবলিককে খুঁজে পাওয়া দুস্কর। যাই হউক আপনি যদি এমন সমস্যায় পড়ে থাকেন তবে নিচের নিয়মে কালোজিরার তেল মালিশ ব্যবহার করেন।
আশা করি উপকার পাবেন।
আমাদের মধ্যে যাদের চুলকানি রয়েছে তারা যদি কালোজিরার ভাজা তেল গায়ে মাখে তবে চুলকানিতে উপকার হয়।
সন্তান প্রসবে
কালোজিরার আরেকটি বিশেষ গুণ রয়েছে যা সত্যিই জানা খুবই জরুরী। এটি নিয়মিত পানিতে সিদ্ধ করে খেলে সন্তান প্রসব তাড়াতাড়ি হয়।
কোন গর্ভবতী মহিলা নিয়মিত কালোজিরা পানিতে সিদ্ধ করে খেলে তার প্রসব যন্ত্রণা অনেকটা কমে যেতে পারে।
স্মৃতিভ্রংশ
কালোজিরা বেশি খেলে কি হয়? যদি বেশি খাওয়ার ফলে সমস্যা হয়ে থাকে-
তাহলে,
প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত? স্মরণশক্তি ও স্মৃতিভ্রংশ দুর্বলতায় কালোজিরা অনেক উপকারী। নিয়মিত ২.৫ গ্রাম কালোজিরা ১৮ মিলিলিটার মধুসহ খেলে এ রোগ সেরে যায়।
আপনার সন্তান এর ব্রেইন বাড়াতে চাইলে নিয়মিত কালোজিরা খাওয়াতে পারেন।
স্বরণশক্তি বিভিন্ন কারণে কমে যায়। এই কমে যাওয়া স্মৃতিশক্তিকে বর্ধিত করার জন্য নিয়মিত কালো জিরা সেবন করুন।
খুব সুন্দর ফলাফল পাবেন আশা করছি।
অন্যান্য উপকার
প্লীহাবৃদ্ধি, জন্ডিস, শূল ব্যথা, বুকের ব্যথা, সেই সাথে বমনেচ্ছায় কালোজিরা বেটে খেলে এসব রোগ সারে। প্রস্রাবের বাধকতা সারাতে পরিমাণ মতো কালোজিরা খেলে প্রস্রাব পরিষ্কার হয়।
দাঁতের ব্যাথায় গরম পানিসহ কালোজিরা নিয়ে মুখে রাখলে ব্যাথা অনেকাংশ কমে যায়। চেহারার উজ্জলতা বাড়াতেও বিশেষভাবে কাজে লাগে কালোজিরা।
কেননা,
একে নিয়মিত ঘিয়ের সাথে মিশিয়ে খেলে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং সেই সাথে রং ফর্সা হয়। ভিনেগারের সাথে মিশিয়ে খেলে কৃমির প্রকোপ কমে যা।
আবার,
ধবল এবং চুলকানিতে কালোজিরা সমানভাবে কাজে লাগে। কালোজিরা নতুন চুল গজাতেও বিশেষভাবে কাজে লাগে।
হাত পা ফোলা এবং ব্যাথা নিরাময়ে কালোজিরার অনেক গুণের কথা শোনা যায়। হুল ফুটানোর যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য কালোজিরা সেবন করুন।
বেটে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিন।
কালোজিরা যে শুধুমাত্র মানুষের জন্যই উপকারী তা কিন্তু। এটি গবাদি পশুর জন্যও অত্যন্ত উপকারী।
এগুলো ছাড়াও কালোজিরার আরো অনেক গুণ রয়েছে যা সত্যিই মনে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি করে। আপনার যদি নতুন কিছু জানা থাকে তবে কমেন্ট করে জানাবেন।
আশা করছি কালোজিরার নানান গুণের বিষয়ে আপনি জেনে গেছেন। কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন। আর নিত্য টিউনের সাথেই থাকবেন,
এই প্রত্যাশায়,
আল্লাহ্ হাফেজ।