মোবাইলে উইন্ডোজ ১১ অবিশ্বাস্য হলেও এটা সত্য যে আপনার সাধের স্মার্টফোনে আপনি উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করতে পারবেন। হেই! আপনার মাথা ঠিক আছে তো?
জ্বি স্যার, আমার মাথা তো ঠিকই আছে, কিন্তু আপনি যখন পুরো পোস্টটি পড়বেন তখন আপনার চোখ কপালে উঠার মত অবস্থা হয়ে যাবে।
তবে সবার আগে আমাদের জনা দরকার উইন্ডোজ আসলে কি?
উইন্ডোজ কি? (What is Windows?)
এবার উইন্ডোজ চলবে মোবাইল ফোনে। মানে মোবাইলে উইন্ডোজ ১১! কথাটা শুনতেই ঠিক কেমন একটা মনে হচ্ছে, কি তাই নাহ্? আসলেই কি এটা সম্ভব আর যদিও বা হয়ে থাকে তবে কিভাবে? নিশ্চয় এটি জানার জন্য অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে আছেন।
আপনি নিশ্চয় অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে পরিচিত। মোবাইলে প্রথমের দিকে একটি ভার্সন আসলো যা 4.4.2 কিটক্যাট নামে পরিচিত, এরপর আসলো, 5.00 যা ললিপপ নামে পরিচিত। তারপর আসলো 6.00 যাকে মার্শম্যালো নামে অভিহিত করা হয়।
এভাবে পর্যায়ক্রমে 7.00 নট, 8.00 অরিও, দেন 9.00 পাই সবার শেষে 10 এবং 11 গো-এডিশন নামে ভার্সন সহজে দেখতে পাওয়া যায়।
এসব তো হচ্ছে মোবাইলের জন্য অপারেটিং সিস্টেম (OS – Operating System) । আপনি নিশ্চয় অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে জানেন?
যদি না জেনে থাকেন তবে দেখুন এন্ড্রয়েড আসলে কি? এটি কি কোন অপারেটিং সিস্টেম? আশা করি এখান থেকে আপনার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর পেয়ে যাবেন।
সেই সাথে আপনি আইফোন অপারেটিং সিস্টেম এর ধারণাও পেয়ে যাবেন। তো বন্ধুরা মূল কথায় চলে আসি।
মোবাইলে তো আমরা বিভিন্ন বিনোমদনমূলক গেইম খেলি তাই নাহ্? আচ্ছা কম্পিউটারের গেইম যদি মোবাইল ফোনে খেলা যায় তবে কেমন হবে?
কম্পিউটারের উইন্ডোজ সিস্টেম মোবাইল ফোনে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে তা জানার আগে আমাদের কিন্তু জানা উচিত রেনেগেট ফিচার কি?
তাহলে চলুন জেনে নিই কি এই রেনেগেট ফিচার?
রেনেগেট ফিচার (Renegade Features)
এটা মূলত ডিভেলপার এর একটি টিম যারা বিভিন্ন প্লাটফর্ম নিয়ে রিসার্চ করেন আর পাশাপাশি অপারেটিং সিস্টেম যাতে বিভিন্ন ডিভাইসে চালানো সম্ভব হয় তার উপর গবেষণা চালিয়ে থাকেন।
বর্তমান তাদের একটি নতুন প্রজেক্ট হলো মোবাইল ফোনে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম চালনা করা।
সত্যিকার অর্থে এটা শোনার পর অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য বলে মনে হবে। তবে এটা কিন্তু বাস্তব। তাহলে চলুন কোন স্মার্ট ফোনগুলো এ ধরণের সুবিধা দিয়ে থাকে এক পলকের জন্য দেখে নিই।
আরো বিস্তারিত জানার জন্য তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন এখান থেকে।
উইন্ডোজ ১১ সম্পর্কে কিছু তথ্য
উইন্ডোজ ১১ এর বেশ কিছু ফিচার রয়েছে যা অনেককে রীতিমত ভাবিয়ে তোলার মত। এক নজরে দেখি কি আছে উইনডোজ ১১ এর মাঝে।
- ডেস্কটপ ভিউ
ডেস্কটপ ভিউ উইন্ডোজ ১১ এর অনন্য বৈশিষ্ট্য। এটা ব্যবহারকারীর কাজকে কয়েকগুণ সহজ করে তোলে।
বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন উইন্ডোজ ১০ এ যেখানে নিচের মেন্যুবার একেবারে বাম থেকে দেখাতো সেখানে উইন্ডোজ ১১ এ মধ্যবর্তী স্থান থেকে দেখায়।
এখানে অ্যাপগুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে সজ্জিত। আপনাকে বাড়তি কোন কষ্ট করতে হবে না।
- মাইক্রোসফট টিম এর সাথে কন্ট্যাক্ট
বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করলে পিসি অনেকাংশই স্লো হয়ে যায় নিশ্চয়। অথচ কিছু দরকার অ্যাপস যদি আাগে থেকেই উইন্ডোজ সেট করা থাকে তবে কাজটা কতই না সহজ হবে ভাবুন তো!
হ্যাঁ উইন্ডোজ ১১ এর মধ্যে মাইক্রোসফট টিম সেট করার কারণে যোগাগের বিষয়টি অত্যন্ত পরিস্কার হয়ে গেছে।
এক্ষেত্রে আলাদা কোন এপস ইনস্টল করে বাড়তি স্পেস খরচ করিয়ে অতিরিক্ত ব্যয়ের কোন দরকার পড়বে না।
-
এন্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন
উইন্ডোজ ১১ এর আরেকটি চমৎকার হচ্ছে এখানে এন্ড্রয়েডের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন সেট করা হয়েছে।
এখন কেউ ইচ্ছে করলেই উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল দিয়ে তার কম্পিউটারে মোবাইলের বিভিন্ন এপস চালাতে পারেন।
অর্থাৎ আলাদা করে মোবাইল এর কোন দরকার পড়ছে না। তাহলে? যদি মোবাইলেরই দরকার না পড়ে তবে কেন আমরা মোবাইলে উইন্ডোজ চালাবো?
সত্যিই তো, এমন প্রশ্ন হতে পারে স্বাভাবিক। তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন। পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরণের মানুষ রয়েছে। একেক জনের চাহিদা একেক রকম। কারে চাওয়ার সাথে কারো মিলবে না।
এমনি করে কেউ ফোন পছন্দ করেন। আবার অনেকেই ছোট ডিসপ্লে হবার কারণে ফোনের পরিবর্তে কম্পিউটার পছন্দ করে থাকেন।
আর এই কারণেই ডিভেলপার টিম বিভিন্ন বিষয় চিন্তা করে। যারা কম্পিউটার কিনেছে তাদেরকে তো আর বলা যাবে না ভাই তোর কম্পিউটারটা শশুড় বাড়ি দিয়ে আয় আর একটা মোবাইল কিনে নে😛
অপরদিকে একজন মোবাইলের ব্যবহারকারীকে তো আর বলা যাবে না যে তোর মোবাইলটা গালফ্রেন্ডকে দিয়ে কম্পিউটার নে😛
- ফিড উইজেড
এর মাধ্যমে আপনি আবহাওয়া সংবাদ সহ নিত্য নতুন কিছু সংবাদ পাবেন। এটা সাইডবারে প্যানেল আকারে থাকবে।
এর জন্য টাস্কবারে একটি টাচপ্যাড পাবেন। যেখানে টাচ করলেই বিভিন্ন উইজেড ওপেন হবে।
- লেআউট
লেআউট হচ্ছে কোন কিছুর বাহ্যিক অবস্থ্যা। যখন আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিজিট করি তখন সবার আগে আমাদের সামনে যে দৃশ্যটি ভেসে ওঠে তাকেও যেমন লেআউট বলা হয় তেমনি,
কম্পিউটার চালু করার পর আমাদের চোখের সামনে যে দৃশ্যটি ভেসে ওঠে তাকেও তেমনি করে লেআউট বলা হয়।
উইন্ডোজ ১১ এর যে লেআউটটি আমরা দেখি তা সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
যে সকল ফোনে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করা যাবে!
- Google Pixel 3 – গুগল পিক্সেল ৩
- Nokia 9 Pure view – নোকিয়া ৯ পিউরভিউ
- Samsung Galaxy S9 Plus – স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৯ প্লাস
- Xiaomi Black Shark – শাওমি ব্ল্যাক শার্ক
- Asus Zen Phone 5 Z – আসুস জেনফোন ৫জেড
- Motorola Moto Z2 Force – মটোরোলা মোটো জেড২ ফোর্স
- Miyazu 16, 16 Plus – মিইজু ১৬, ১৬ প্লাস
- Redmi K20 Pro/ M9 Pro – রেডমি কে২০ প্রো / মি ৯টি প্রো
- ZT Exxon 9 Pro, Nubia X – জেডটিই এক্সন ৯ প্রো, নুবিয়া এক্স
- One Plus 5, 5T, 6T, 7, 7 Pro – ওয়ানপ্লাস ৫, ৫টি, ৬, ৬টি, ৭, ৭ প্রো
- Oppo 5X – অপো ফাইন্ড এক্স
- Sony Xperia XZ2 সনি এক্সপেরিয়া এক্সজেড২
- Poco Phone F1 পোকোফোন এফ১
তাহলে,
আপনার ফোনটিও কি উইন্ডোজ ১১ সাপোর্ট করবে। উপরের ডিসকাশন থেকে জেনে নিন। আশা করছি বুঝতে পারছেন।
আচ্ছা সবই তো বুঝলাম ভাই যে মোবাইলে উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল করবো। কিন্তু তার দরকার কি? আর কেনই বা আমরা এটা করতে যাবো যখন পিসিতেই সবকিছু করা সম্ভব।
জ্বি জনাব,
পড়তে থাকুন। আপনার মনের মধ্যে থাকা প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ্।
আপনি পছন্দ করতে পারেন,
ডিলিট হওয়া ফাইল কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায়?
কেন ফোনে উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল করবো?
আসলে মোবাইলে উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল করা না করা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে অনেক ব্যক্তি আছেন যারা উইন্ডোজ এর বিভিন্ন কাজ করে থাকেন।
দেখুন তো তাদের কাজগুলো যদি একই ফোনে করা যায়, বুঝলেন না তো বুঝে দিচ্ছি চলুন। একজন ব্যক্তি তার স্মার্ট ফোনে তার যাবতীয় কাজ (ফোন সংশ্লিষ্ট) করে থাকে।
এখন যদি ঐ ব্যক্তি উইন্ডোজ এর সকল ফিচার তার মোবাইলে পেয়ে যান তবে তার জন্য সেটা কি ভাল হবে নাকি খারাপ?
আপনার জন্যই প্রশ্নটি উন্মুক্ত করে দিলাম। একটু ভেবে বলুন। দুইটি আলাদা অপারেটিং সিস্টেম একই জায়গায়। বিষয়টা কেমন তাই নাহ্?
খুবই মজার কিন্তু। আমরা দেখেছি একটি কম্পিউটারে উইনডোজ ১১ ইনস্টল করার পর তাতে ইম্যুলেটর ব্যবহার ছাড়ায় সরাসরি এন্ড্রয়েড ফোনের কাজ করা যায়।
ঠিক একই ভাবে একটি ফোনেই যদি ফোনের সমস্ত কাজের পাশাপাশি উইনডোজের কাজ করা যায় তাহলে সত্যিই অনেক লাগে।
আপনার ফোন যদি এমন ফিচারযুক্ত হয় তবে আপনিও ট্রাই করে দেখতে পারেন। আশা করি আনন্দ পাবেন।
তো বন্ধুরা অনেক দেরি হয়ে গেল। আজ আর নয়। দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন আলোচনায়। সে পর্যন্ত ভাল থাকবেন।
সুস্থ্য থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।