অনলাইন জগৎ সত্যিই এতটা বিশাল যে তার বিশালতা পরিমাপ করা অসম্ভব। আমরা অনেকেই অনলাইনের সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত। আমাদের মধ্যে যারা অনলাইনে সারাক্ষন থাকি, বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ করি তারা প্রায়শই একটি কথা শুনে থাকি। এটি হচ্ছে প্রফেশনাল ইমেইল কি? একটি বিজনেস ইমেইল বলতে আসলে কি বোঝায়? কিভাবে একটি বিজনেস মেইল খুলতে হয়? কি হতে পারে এর গুরুত্ব?
প্রফেশনাল ইমেইল
আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় কিভাবে একটি বিজনেস মেইল খুলতে হয়? সেই সাথে এই মেইলকে কিভাবে একটি সাধারণ জিমেইল একাউন্টের সাথে যোগ করতে পারি?
তো বন্ধুরা চলুন শুরু করা যাক,
প্রথমে আমরা জেনে নিই যে প্রফেশনাল ইমেইল বলতে আসলে কি বোঝায়? একটি বিজনেস ইমেইল আসলে কি?
প্রফেশনাল ইমেইল কি?
Professional ইমেইল বলতে কি বোঝায়? প্রফেশনাল হচ্ছে পেশা সংশ্লিষ্ট বিষয়। তার মানে প্রফেশনাল ইমেইল বলতে বোঝাবে কোন নির্দিষ্ট পেশার সাথে সংযুক্ত ইমেইল।
একটি বিজনেস ইমেইল বলতে সাধারণত ব্যবসায়ীক হিসাব নিকাশের সাথে যুক্ত থাকা কোন মেইলকে বোঝানো হয়ে থাকে।
এসব ইমেইল অ্যাড্রেস কোন না কোন ডোমেইন এর নামের সাথে সংযুক্ত থাকে। যেমন আমার একটি ডোমেইন আছে, example.com । এক্ষেত্রে আমার বিজনেস মেইল তৈরী করবো,
support@example.com,
or,
mail@example.com
ঠিক এমনি করে বিভিন্ন ডোমেইন নামের জন্য বিভিন্ন বিজনেস মেইল তৈরী করা যায়।
সাধারণত যে মেইলগুলো আমরা বেশিরভাগ সময় ব্যবহার করে থাকি সেগুলো সাধারণ ইমেইল। আমাদের অনেকের প্রতিষ্ঠান থাকে।
আর প্রতিষ্ঠানের প্রচারের স্বার্থে একটি বিজনেস মেইল ব্যবহার হয়ে থাকে। ফলে ব্র্যান্ডিং ভ্যালু ভাল পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটি সবার কাছে অনেক পরিচিতি লাভ করে।
বিজনেস মেইল ব্যবহারের সুবিধা
প্রতিষ্ঠানের দ্রুত প্রচারের জন্য বিজনেস মেইল বিশেষভাবে কাজে লাগে। যেমন ধরে নিচ্ছি আপনার একটি জুতার ফ্যাক্টরি আছে।
এর নাম হচ্ছে exampleshoe. এখন আপনার বিভিন্ন ক্রেতার নিকট সাধারণ মেইল দিয়ে পণ্যের অফারের বিষয়ে জানালেন।
কেন বিজনেস ইমেইল তৈরি করবেন এর প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধাসমূহ
ঐ ক্রেতা আপনার মেইলটি পড়ার পরই কেবল বুঝতে পারবে যে এটি হচ্ছে আপনার exampleshoe. কিন্তু আপনি যদি তাকে একটি বিজনেস মেইল থেকে ইমেইল পাঠিয়ে দেন যেমন, আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে contact@exampleshoe.com
তবে সেই ক্রেতা মেইল দেখেই বুঝতে পারবে এটি আপনার exampleshoe. ফলে আপনার ব্র্যান্ডিং ভ্যালু বাড়ার সাথে সাথে প্রচারের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।
বিজনেস ইমেইল বনাম ফ্রি ইমেইল
Business E-mail আর ফ্রি ইমেইল এর মধ্যে পার্থক্য কি? এরূপ প্রশ্ন মনে হওয়াটায় স্বাভাবিক। একটি ফ্রি ইমেইল আপনি খুব সহজেই আপনার ফোন নাম্বার দিয়ে খুলতে পারেন।
কিন্তু একটি বিজনেস ইমেইল সার্ভিস আপনি খুব সহজে ফোন নাম্বার দিয়ে খুলতে পারবেন না। এক্ষেত্রে আপনাকে টাকা গুনতে হবে।
বিজনেস ইমেইল ব্যবসায়ীক ভ্যালু বাড়ায়। অপরদিকে ফ্রি ইমেইল গতানুগতিক ধারায় চলে। বিজনেস ইমেইল ডোমেইন হোস্টিং এর সাথে সংশ্লিষ্ট।
বিজনেস ইমেইল আর ফ্রি ইমেইল এর মধ্যে পার্থক্য কী?
অপরদিকে,
ফ্রি মেইল এ ডোমেইন হোস্টিং লাগে না।
সাধারণ মেইলের সাথে বিজনেস মেইল কানেক্ট করা
একটি বিজনেস মেইল খোলার নিয়ম
আপনার যদি কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে থাকে তবে একটি বিজনেস মেইল আপনার জন্য খুবই ভাল ফল বয়ে আনবে।
এখন বিষয় হচ্ছে বিজনেস মেইল তৈরী করতে হলে আমরা জানি ডোমেইন এবং হোস্টিং এর মাধ্যমে করতে হয়। এখন যদি কোন ইমেইল পড়তে চাই তবে আমাকে হোস্টিং এর সি-প্যানেলে ঢুকে সেই মেইল পড়তে হবে।
এটা বরাবর বিরক্তিকর একটি বিষয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য মূলত আমরা একটি সাধারণ জিমেইল এর সাথে আমাদের বিজনেস মেইলকে কানেক্ট করে নেব।
তবে এর জন্য আমাদের হালকা কিছু কাজ করতে হবে। প্রথমে একটি বিজনেস মেইল খুলে নেব নির্ধারিত হোস্টিং এর সি-প্যানেলে গিয়ে।
কিভাবে একটি বিজনেস মেইল খুলবো?
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক,
প্রথমে আপনার হোস্টিং এর সি-প্যানেলে প্রবেশ করুন। তারপর Email Accounts এ চলে যান।
তারপর,
দেখুন আপনার সামনে পূর্বের তৈরী করা কোন বিজনেস মেইল থাকলে তা দেখাবে এবং ডানদিকে Create নামে একটি মেন্যু দেখতে পাবেন।
এবার Create এ ক্লিক করুন। অতপর আপনার সামনে নিচের মত একটি উইনডো চলে আসবে।
এবার Username এর জায়গায় আপনার পছন্দের ইমেইল অ্যাড্রেসটি (বিজনেস মেইল) লিখুন। খেয়াল করেন আপনার ইমেইল এর শেষের অংশ কিন্তু অটোমেটিক আপনার ডোমেইন নাম অনুযায়ী চলে আসবে।
অতপর শক্তিশালী একটি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। এবার Create এ ক্লিক করে ১ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। আপনার বিজনেস মেইল রেডি।
প্রফেশনাল ই-মেইল দিয়ে কি হবে?
কিভাবে এই বিজনেস মেইলকে একটি সাধারণ মেইল এর সাথে কানেক্ট করবেন তা অন্য এক দিন চিত্রসহ দেখাবো ইনশাআল্লাহ্।
এখন চলুন জানবো,
বিজনেস মেইল এর গুরুত্ব
একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের প্রচারের জন্য একটি বিজনেস মেইল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্র্যান্ডিং ভ্যালু বাড়ানোর সাথে সাথে একটি বিজনেস মেইল প্রতিষ্ঠানের প্রচারে বিশেষভাবে কাজে লাগে।
বিজনেস মেইল একটি ব্যবসার একক ঠিকানা প্রকাশ করে। সাধারণ মেইল এর তুলনায় বিজনেস মেইল গ্রাহকের আস্থা বৃদ্ধি করে।
ফলে একজন ব্যবসায়ী লাভবান হয়ে থাকেন। ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকের মাঝে সুন্দর সেতুবন্ধন তৈরী করে একটি বিজনেস মেইল।
যেহেতু বিজনেস মেইল অর্থ ব্যয় করে ব্যবহার করতে হয় তাই এর নিরাপত্তার বিষয়টি সাধারণ মেইল এর তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে।
ফলে খুব সিকিউর ওয়েতে গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ সম্পন্ন হয়।
আমি কি মোবাইল দিয়ে একটি বিজনেস ই-মেইল তৈরী করতে পারবো?
জ্বি জনাব, আপনি শুধু একটি কম্পিউটারই নয়, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট এমনকি একটি স্মার্ট ফোনের মাধ্যমেও প্রফেশনাল অর্থাৎ বিজনেস মেইল তৈরী করতে পারবেন।
প্রক্রিয়া পুরোটায় একই। তবে মোবাইলে বিষয়গুলো একটু আলাদা মনে হতে পারে। সেজন্য প্রয়োজনে আপনার ফোনটিকে ডেস্কটপ ভিউ এ পরিণত করে নিন।
তাহলে বুঝতে সুবিধা হবে। নতুন কোন ঝামেলায় পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
একটি প্রফেশনাল ই-মেইল ব্যবহারের নিয়ম
একটি বিজনেস মেইল খুললেন আর সব জায়গায় ব্যবহার করলেন তাহলে কিন্তু আপনার ব্র্যান্ডিং ভ্যালু সাধারণ মেইল এর মত হয়ে যাবে।
বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সব ক্ষেত্রে এই মেইল ব্যবহার করা উচিত হবে না বলে আমি মনে করি। কোন ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্যেই কেবলমাত্র আমাদের বিজনেস মেইল ব্যবহার করা উচিত।
একটি সাধারণ মেইল যেভাবে ব্যবহার করেন ঠিক একই উপায়ে একটি বিজনেস মেইল ব্যবহার করতে পারেন। তবে সব ক্ষেত্রে আপনার প্রফেশনাল ইমেইলকে ব্যবহার করবেন না।
আশা করি বিজনেস মেইল এর বিষয়ে ধারণা পেয়ে গেছেন। উপরের পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি খুব সহজে একটি প্রফেশনাল ই-মেইল খুলতে পারেন।
আপনি আরো পছন্দ করতে পারেন,
ক্যারিয়ার হিসেবে ওয়েব ডিজাইন কিংবা ব্লগিং-
তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই থাক। আগামীতে দেখা হবে জীবনের নতুন কোন বিষয় নিয়ে। সে পর্যন্ত আল্লাহ্ আপনাদের সুস্থ্য রাখুন।
আমিন।