CMS হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস কতটা প্রত্যাশিত?

CMS হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস কতটা যুক্তি নির্ভর হতে পারে? সেই সাথে এর মূল্য কেমন? আজকে আমরা এসব বিষয় জানার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ্। আমরা কতটা প্রত্যাশা করতে পারি ওয়ার্ডপ্রেসের উপর।

বর্তমান সময়ের বহুল আলোচিত এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত সিএমএস হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেসর জুড়ি মেলা ভার। বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৪৫% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসের দখলে। সুতরাং নির্দ্বিধায় বলা যায় WordPress is the most usable CMS in the world.

CMS হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস কতটা প্রত্যাশা করা যায় তা বোঝার আগে আমাদের সিএমএস এবং ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যসিক জ্ঞানটা প্রয়োজন।

তাহলে প্রথমে জেনে নিই যে, সিএমএস আসলে কি? সিএমএস ওয়ার্ডপ্রেস কেমন তার বিস্তারিত থাকছে আমাদের আজকের আয়োজনে।

CMS (সিএমএস)

Content Management System (কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) কে আমরা সংক্ষেপে বলি CMS. একটি ওয়বসাইটের কনটেন্টগুলো (ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত ছবি, অডিও, ভিডিও, অ্যানিমেশন, কোন টেক্সট ইত্যাদি) কিভাবে প্রদর্শণ করানো হবে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয় একটি সিএমএসএর মাধ্যমে।

তাহলে ডিজিটাল কনটেন্ট কাকে বলবো? ডিজিটাল কনটেন্ট হলো ডিজিটাল উপায়ে কোন টেক্সট/অডিও/ভিডিও কিংব কোন অ্যানিমেশনকে প্রকাশ করা।

ডিজিটাল কনটেন্টকে আমরা মূলত ৪ ভাগে বিভক্ত করে থাকি।

১) কোন টেক্সট কিং লিখিত কোন কনটেন্ট

২) অডিও বা কোন সাউন্ড ক্লিপ

৩) ভিডিও কিংবা কোন অ্যানিমেশন

৪) ইনফো গ্রাফিক্স

পৃথিবীতে অনেকগুলো সিএমএস রয়েছে। যেমন পরিচিত এবং বহুল ব্যবহৃত সিএমএস হচ্ছে, ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা, দ্রুপাল, ম্যাজেন্টো

এসব সিএমএস ছাড়াও অনলাইনে হাজারো সিএমএস এর দেখা মেলে।

সাধারণ কোন কোডিং এর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট তৈরীর তুলনায় একটি সিএমএস ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরী করা অনেকাংশই সহজ একটি কাজ।

নরমাল কোডিং অনেকটা কঠিনও বটে। বলতে গেলে সহজ উপায় থাকতে মানুষ কঠিনের দিকে কেন যাবে?

তাই আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট তৈরীর চিন্তা করে থাকেন আর আপনার কোডিং জ্ঞান ০ পর্যায়ে তবে আমি বলবো একটি কমন সিএমএস দিয়ে আপনার যাত্রা শুরু করে দিন।

দেখবেন খুব সহজেই একটি ওয়েবসাইটের মালিক হয়ে গেছেন। তাই একবার হলেও চেষ্টা করে দেখুন। কিছু হয় কি না?

কেন আপনি সিএমএস ব্যবহার করবেন?

প্রশ্ন হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট তৈরীতে কেন আপনি সিএমএস এর ব্যবহার করবেন? কতটা নিরাপদ হতে পারে একটি সিএমএস আপনার জন্য?

যেখানে লারাভেল, কেইক পিএইচপি, কোডইগনাইটারের মত পাওয়ারফুল ফিচার সমৃদ্ধ এব পুরো সিকিউর সিস্টেম আছে সেখানে সিএমএস কেন?

এর প্রথম কারণ হচ্ছে আপনি কোডিং নলেজে ব-কলমে। কোডিং এর কিছুই জানেন না। আর উপরের সিস্টেমগুলো সব কোডিং এর খেলা। সো এগুলো আপনার জন্য না। তাই আপনাকে অন্য কোন ওয়ে অবলম্বন করতে হবে।

আর দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, সিএমএস হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস সব থেকে সহজ একটি উপায়। কোডিং জ্ঞান শুণ্যের কোঠায় এমন অনেকেই এর মাধ্যমে সফলতা পেয়েছেন।

তাই আপনি একেবারে নতুন হলেও কোনরূপ সমস্যা নাই। চেষ্টা চালিয়ে যান। দেখবেন অল্প সময়ের মধ্যেই সফলতা পেয়েছেন।

আবার বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে সিএমএসএর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আপনি যে কোন একটি সিএমএস শিখলে পরবর্তীতে অন্যটা শেখা আপনার জন্য পানির মত সহজ হয়ে দাড়াবে।

সুতরাং সিএমএস শিখলে আপনি অফলাইন থেকে শুরু করে অনলাইনেও প্রচুর কাজ পেয়ে যাবেন এটা বলার কোন অপেক্ষাই রাখে না।

সুতরাং কোডিং জ্ঞান ছাড়া অর্থাৎ আপনি নতুন, ওয়েবসাইট বিল্ড করার সহজ একটি উপায়, মার্কেট চাহিদাসহ বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে একটি ওয়েবসাইট বিল্ড করতে সিএমএস ব্যবহার করা শ্রেয়।

তবে আপনার কোডিং এ দক্ষতা থাকলে অন্যভাবে ট্রাই করে দেখতে পারেন। সেটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। এবার আসি ওয়ার্ডপ্রেসের দিকে,

ওয়ার্ডপ্রেস আসলে কি? কিভাবে শেখা যায়? সহজ নাকি কঠিন কোন কিছু?

আপনি পছন্দ করতে পারেন এমন কিছু…

এইচটিএমএল কি? ক্যারিয়ার হিসেবে কেমন?

ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress)

সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্লগ পাবলিশ করার টুলস হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস সর্বজন স্বীকৃত। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী একটি প্লাটফর্ম। তার মানে আপনি অনায়াসেই এর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট বিল্ড করতে পারেন।

ওয়ার্ডপ্রেস পিএইচপি (PHP) এবং মাইএসকিউএল (MySql) এর সমন্বয়ে গড়ে তোলা একটি জক জনপ্রিয় সিএমএস। What is WordPress in Bangla জানুন বিস্তারিত এই পোস্ট থেকে।

সর্বাধিক জনপ্রিয় Open Source Content Management System হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেসের তুলনায় অন্য কোন সিএমএস ব্যবহার হয় না।

অনেক অল্প সময়ে অনেক বেশি পরিমাণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছে ওয়ার্ডপ্রেস। 

বিভিন্ন থিম ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের আউটলুক পুরাই পরিবর্তন করা সম্ভব। আবার অনেক ধরণের প্লাগিন রয়েছে যেগুলোর সাহায্যে নিত্য নতুন অনেক ফাংশনালিটি যোগ করতে পারবেন।

একজন নন-কোডার অনায়াসেই একটি আকর্ষণয়ী ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইট তৈরী করতে পারেন এর মাধ্যমে।

ওয়ার্ডপ্রেসের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে থিম এবং প্লাগিন। ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডিভেলপমেন্ট  শিখলে একটি সুন্দর ক্যারিয়ার গঠন করা সম্ভব।

ওয়ার্ডপ্রেস থিম হচ্ছে ওয়েবসাইটের বাহ্যিক অবয়ব তৈরীর মূলমন্ত্র। অর্থাৎ, একটি ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে, কোথায় হেডার, কোথায় ফুটার কোথায় সাইডবার থাকবে তা নির্ধারণ করতে থিম কাজ করে থাকে।

অপরদিকে,

প্লাগিন হচ্ছে আভ্যন্তরিন কার্যাবলী নিয়ন্ত্রনের মাধ্যম। ওয়েবসাইটের কোন ফাংশন কিভাবে কাজ করবে তা কেবলমাত্র প্লাগিন এর মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়।

CMS হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস

আমরা সিএমএস এবং ওয়ার্ডপ্রেসের বিষয়ে তো জানলাম। তাহলে এবার জানার চেষ্টা করবো CMS হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস কেমন হবে?

এত্ব সব সিএমএস থাকতে ওয়ার্ডপ্রেস কেন? অন্য যে কোন একটি দিয়েও তো ওয়েবসাইট তৈরী করা যায়।

জ্বি যায় তবে অনলাইনের প্রায় ৪৮% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে গড়া। সুতরাং এর বিশাল কমিউনিটি রয়েছে। যখনই কোন সমস্যায় পড়বেন শুধুমাত্র নক করার কাজ। নিমিষেই প্রবলেম সলভ।

এর জন্য নিচের কয়েকটি কারণ দেখলেই আশা করি বিষয়টি সম্পূর্ণ হয়ে যাবে-

১) এটি অনেক উন্নত একটি সফটওয়্যার কিংবা ব্লগ পাবলিশিং টুলস যা সম্পূর্ণ ফ্রি।

২) এসইও ফ্রেন্ডলী এবং নিরাপত্তার দিকে শতভাগ কার্যকরী।

৩) হাজারো থিম এবং প্লাগিন ফ্রি পাওয়া যায়।

৪) ইচ্ছেমত থিম পরিবর্তন করে সাইটের আউটলুক পরিবর্তন করা সম্ভব।

৫) অনেক সহজেই কোডিং জ্ঞান ছাড়ায় পুরো সাইটের কাস্টোমাইজ করা সম্ভব।

৬) নিত্য নতুন ফিচার যোগ করার জন্য আদর্শ একটি সিএমএস হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস।

সুতরাং আমরা বলতেই পারি যে সিএমএস হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস সেরা।

ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কি আমরা কোন ওয়েবসাইটকে অন্য সিএমএস যেমন, জুমলা, দ্রুপাল, ম্যাজেন্টোতে কনভার্ট করতে পারবো না?

জ্বি, আপনি ওয়ার্ডপ্রেসের কোন সাইটকে অনায়াসেই অন্য একটি সিএমএস এ পরিবর্তন করতে পারেন। তবে তার জন্য আপনার কিছু বাড়তি নলেজ আহরণ করতে হবে।

মূল বিষয়টি সব সিএমএসএ একই হলেও অনেক কিছু তফাৎ রয়েছে এদের মাঝে। আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থেকে কোন ওয়েবসাইকে অন্য সিএমএস এ কনভার্ট একজন দক্ষ ওয়েব ডিভেলপার এর মাধ্যমে করতে পারেন।

তাহলে বোঝা গেল ওয়ার্ডপ্রেসের মূল বিষয় হচ্ছে তার থিম এবং প্লাগিন। একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডিভেলপার প্রথম দিকে ওয়ার্ডপ্রেসের বিষয়ে ধারণা নিলেও পরবর্তীতে থিম এবং প্লাগিন নিয়ে চর্চা করেন।

কেননা এখানেই রয়েছে মূল বেনিফিট। যদি আপনি বুঝে থাকেন। এমন অনেকেই রয়েছেন যারা শুধুমাত্র একটি থিম বিক্রি করেই কয়েক কোটি টাকার মালিক!

শেষকথা,

অনেক সহজ একটি প্লাটফর্ম ওয়ার্ডপ্রেস। আপনি এর মাধ্যমে আপনার অনলাইন ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন। অনেক ফ্রি রিসোর্স পাবেন যারা মাধ্যমে চর্চা করে একজন ভালমানের ওয়ার্ডপ্রেস ডিভেলপার হওয়া কোন কঠিন কাজ নয়।

অফলাইন থেকে শুরু করে অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে এর প্রচুর চাহিদা থাকায় এর মাধ্যমে আপনার ক্যারিয়ার গড়লে অনেক লাভ হবে বলে আশা করা যায়।

সুতরাং হয়ে যাক আপনার শুভ যাত্রা ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে নিত্যটিউনের সাথে। জীবন ও প্রযুক্তি ঐকতান-নিত্যটিউন।

আল্লাহ্ হাফেজ।

Author

Check Also

ওয়ার্ডপ্রেস থিম রিভিউ

৫০+টি সেরা ওয়ার্ডপ্রেস থিম – ২০২৪ – থিম রিভিউ

ওয়ার্ডপ্রেস বর্তমান সময়ের সব থেকে বেশি জনপ্রিয় এবং ব্যবহৃত একটি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম। বর্তমানে ইন্টারনেটে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *