আকাশ কি? আকাশ বলতে সত্যিই কি কিছু আছে? আসলে আকাশ হচ্ছে, বায়ুমন্ডল ও মহাশূন্য তার অংশ, যা ভূপৃষ্ঠের বাহিরের দিকে অবস্থিত। যদি আমরা জ্যোতির্বিদ্যা অনুযায়ী হিসেব করি তাহলে আকাশকে খ-গোলক বললেও ভুল বলা হবে না।
আকাশ শব্দ মনে আসতেই কেন জানি সূর্যোদয় কাকে বলে এটা মনের মধ্যে উঁকি মারে। তো বন্ধুরা চলুন আমরা এখন জানবো আকাশ সম্পর্কে তথ্য যা হয়তো আমাদের অজানা থাকতে পারে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের যেকোন বিন্দু নির্দেশ করতে আমরা সাধারণত আকাশ শব্দটি ব্যবহার করা থাকি। কিন্তু এর অর্থ শাব্দিক বা ব্যবহারগত দিক দিয়ে ভিন্নও হতে পারে।
যেমন, আমরা যদি বলি আবহাওয়ার ক্ষেত্রে আকাশ কি তাহলে, বায়ুমন্ডলের নিচের দিকে অধিক ঘন অংশকে বোঝানো হয়।
আকাশ বলতে কি বুঝায় আমার মনে হয় এ বিষয়ে আর প্রশ্ন থাকার কথা নয়, যদি থেকে থাকে তবে দেরি না করে পোস্টটি দ্রুত পড়ে ফেলুন।
আপনার মনের সকল প্রশ্ন দুর হবে ইনশাআল্লাহ্। আপনি আকাশ সম্পর্কে সব অজানা তথ্য জেনে নিশ্চয় অবাক হবেন।
তাহলে দেরি না করে চলুন পড়ে নেয়া যাক-
আকাশ নীল কেন দেখায়-
আকাশ কেন নীল দেখায় তা বলতে গেলে প্রথমেই আমাদের আলোর বিক্ষেপণ সম্পর্কে জানা দরকার।
আলোর বিক্ষপনের ফলে আকাশকে নীল দেখা যায়। কোন কণিকার উপরে আলো পড়লে ঐ কাণিকা বিভিন্ন দিকে আলোকে ছড়িয়ে দেয় যাকে আমরা বিক্ষপন বলি।
যদি এমন প্রশ্ন করা হয় যে, পৃথিবীর রং নীল কেন? এর উত্তর হিসেবে তাহলে আমরা এই আকাশ নীল হওয়ার ব্যাখ্যাকেই উপস্থাপন করতে পারি।
আমরা এটা জানি যে, আলোর বিক্ষেপন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের চতুর্ঘাতের ব্যস্তানুপতি। ভিন্ন বর্ণের আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ভিন্ন হয়।
বেগুনী ও নীল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ অনেক কম এ জন্য এই আলো দুটির বিক্ষপন বেশি হয়ে থাকে।
বেগুনীর চাইতে নীল বর্ণের আলোর প্রতি আমাদের চোখ বেশি সংবেদনশীল। এজন্য আকাশ নীল দেখা যায়।
তাহলে বুঝলেন তো, আকাশ বেগুনি দেখায় না কেন? অর্থাৎ আকাশ নীল দেখায়।
আকাশ সম্পর্কে বিজ্ঞান ও কোরআন কি বলে?
আদিকাল থেকেই মানুষ আকাশ বলতে মাথার উপরে যে বিশাল নীল কিছু একটা দেখতে পাওয়া যায় তাই বলে জানে।
আবার মহাবিশ্ব বলতে বোঝানো হয় এই পৃথীবি আর বিস্তৃত বিশাল নীলিমার সমন্বয়।এ আকাশ সমন্ধে রচিত হয়েছে অনেক কাহিনী গল্প।
মানুষ ধারনা করে এ আকাশ কনক্রিট এর মতো কিছু দিয়ে তৈরি যার কারণে ছাদের মতো হয়ে আছে আমাদর উপরে।
এছাড়াও ধারনা করা হতো এ বিশাল আকাশ কোন খুটি ব্যতিত কিভাবে সৃষ্টিকর্তা স্থির রেখেছেন?
এর মাঝে কি অন্য কোন সৃষ্টি বসবাস করে, অনুরুপ কি এমন আরো আকাশ রয়েছে। এমন নানাবিধ প্রশ্ন মনের মাঝে ঘোরপাক খায়।
জানার অদম্য ইচ্ছাশক্তি থেকেই মানুষ অনেকটা জ্ঞানপন্ডিত হয়েছে বিজ্ঞানের জন্য। বিজ্ঞানের জ্ঞানের জন্যে এ মাহাবিশ্বে যে নীল আকাশ দেখা যায় তা কেবল মাত্র সূর্যের খেলা ছাড়া আর কিছু নয়।
আর এটা সত্য যে, পৃথীবি মোটেও মহাবিশ্বের চাইতে বড় নয়। মহাবিশ্বের তুলনায় এই পৃথীবিকে ক্ষুদ্র সৃষ্টি বলেলেও ভুল বলা হবেনা।
কোরআনে আকাশ সম্পর্কে বলা হয়, আকাশকে ছাদ হিসেবে অবিহত করা হয়েছে।
আকাশের স্তর রাখা হয়েছে সাতটি। যেখানে প্রথম আকাশের স্তর, তারপর প্রথম আকাশ। তারপর দ্বিতীয় আকাশের স্তর তারপর দ্বিতীয় আকাশ।
এভাবে পর্যায়ক্রমে সপ্তাকাশ সৃজিত হয়েছে।
তাহলে প্রথম আকাশ কিসের তৈরি? বলতে পারেন কি? চলুন জেনে নিই।
আরো পড়ুন,
হোটেল এবং মোটেল এর মধ্যে পার্থক্য
আচ্ছা আপনি কি বলতে পারেন-
আকাশের শেষ সীমান কোথায়?
আকাশ বলতে সত্যিই কি কিছু আছে আমরা তা জানলাম।
এবার চলুন জানবো, আকাশ কি শক্ত কিছুর মাধ্যমে তৈরী যার কারণে পিলার বা স্তম্ভের মাধ্যমে দাড়িয়ে আছে বলে মনে হয়?
আমরা শুধু এ মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানি, কিন্তু আকাশ ও মহাবিশ্বের শেষ সীমানা আছে কি নেই সেই সব বিষয়ে তেমন কিছু জানিনা।
বিজ্ঞানের আলোকে আকাশ শক্ত কিছুর কি না, এ বিষয়ে বিজ্ঞানিরা কোন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
এমনাকি এর শেষ সীমানা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেছেন তারা এখন পর্য়ন্ত আকাশের শেষ সীমানা অব্দী পৌছাতে পারেনি।
সুতরাং যখন মধ্যাকর্ষন এর মতো বিভিন্ন বিষয়ের সূত্রের আবির্ভাব বিজ্ঞানে হওয়ার আগেই, কোরআন এ সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আকাশ দেখার যে আনন্দ-
আকাশ দেখার মাঝে একটা নির্মম আনন্দ রয়েছে। ছোট বাবুটা যখন সব বিষয়ে বুঝে না কেবল মাত্র বোঝার ন্যায়।
আকাশে যখন তাকাই তখন যে তারকারাজি চোখের সামনে ভেসে ওঠে তা সত্যিই দেখার মত। সে এক আলাদা রকমের আনন্দ।
এ খুশি যেন কারো সাথে ভাগ করতে চায়না মনটা একান্তই রাখতে চায়। আবারো যদি একটু লক্ষ্য করি কোন এক উচু ছাদে দাড়িয়ে নির্রিগ্নে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখা তখন এক মনোরঞ্জকর আনন্দ বয়ে আনে।
রাতে কালো ও দিনে আকাশ নীল দেখায় কি কারণে-
দিনে আকাশের দিকে তাকালে নীল দেখা যায় এর কারন হচ্ছে আলোর বিচ্ছুরণ। আমাদের এ পৃথীবিতে ভাসমান অবস্থায় বায়ুমন্ডেলে অনেক ক্ষুদ্র ধুলি কণা থাকে।
আর যখন সূর্যের আলো পৃথীবিতে পড়ার সময় এই ধুলি কণা গুলো বিচ্ছুরিত হয়ে থাকে এবং নীল রংয়ের তরঙ্গদের্ঘ্য কম বলে তা বেশি বিচ্ছুরিত হয়।
যার ফলে আকাশ দিনে নীল দেখায়। আবার রাতে সূর্যের আলো না থাকার কারণে বিচ্ছুরিত হতে পারেনা বিধায় রাতে আকাশ কালো দেখায়।
সূর্য ডোবার সময় আকাশ লাল দেখা যায় কেন-
আকাশ দেখতে কার না ভালো লাগে ভালো লাগেনা এমন কাউকে খুজে পাওয়া কঠিন। সূর্য
উঠা বা ডবার সময় এতো বেশি লাল দেখাতে পাওয়া যায়। আলোর বিক্ষেপনের কারণে এমন সব ঘটনা ঘটে থাকে।
কোন ক্ষুদ্র কণিকার উপরে পরে থাকে আর এই কণিকাগুলোই আলোর তরঙ্গকে অনেক দিকে ছড়িয়ে দেয়।
একেই আলোর বিক্ষপন বলে। এতে করে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ সৃুষ্টি হয় যার জন্য বিভিন্ন রংয়ের উদ্ভব হয়।
সূর্যাস্তের সময় সূর্য দিগন্তের কাছাকাছি অবস্থান করেতে দেখা যায়। কখনও কি ভেবে দেখেছেন কেন এমনটা ঘটে?
নিশ্চয় আপনার মনের মধ্যে প্রশ্নটি উঁকি মেরেছে? কিন্তু দুর্ভাগ্য সেভাবে বিষয়টিকে খতিয়ে দেখা হয় নাই।
প্রশ্ন করলে নিশ্চয় এই কথাটিই বলবেন।
তো বন্ধুরা চলুন জেনে নেবো কেন এমনটা ঘটে থাকে? আসলে আমাদের চোখ অনেক সময় যা দেখে তা সত্যিই বিষ্ময়কর।
আমরা কিছুক্ষণ আগে আলোর বিক্ষেপন নামে একটি বিষয়ের সাথে পরিচিত হলাম। আসলে এই বিক্ষেপনই মূলত আমাদেরকে লাল দেখার জন্য সাহায্য করে।
চাঁদের আকাশ কেন কালো-
চাঁদের আকাশ নীল না হয়ে কালো হয়ে থাকে। কারণ, সেখানে কোন বায়ুমন্ডলের অবস্থান থাকে না। সেক্ষেত্রে সেই জায়গায় কোন ধরনের আলোর বিক্ষেপন ঘটাতে পারে না।
আর চাঁদের পৃষ্ঠে চাঁদের আকাশের বিক্ষপ্ত আলো পৌছাতে পারেনা সে জন্য চাঁদের আকাশ কালো দেখা যায়।
তাহলে বলা যেতে পারে যে, আকাশ বলতে সত্যিই কিছু আছে। আপনারা কি বলেন? আকাশ সম্পর্কে আপনার কোন তথ্য জানা থাকলে দয়া করে কমেন্টে জানাবেন।
আসলে জীবন আর প্রযুক্তির তথ্য জানার জন্য মন অধির আগ্রহে বসে থাকে।
তাহলে এত কিছুর পর আমরা নিশ্চয় বলতে পারি যে আকাশ বলতে সত্যিই কিছু আছে এবং অবশই আছে?
আসলে মহান আল্লাহ্ তা’আলা আমদের জন্য কত্ত কিছুই না তৈরী করেছেন। তা দেখার মত চোখ রাখতে হয়।
বোঝার মত অন্তর থাকতে হয়। আজ এ পর্যন্তই। দেখা হবে জীবন আর প্রযুক্তির নতুন কোন অধ্যায়ে নিত্যটিউনে।
সে পর্যন্ত ভাল থাকেন, সুস্থ্য থাকেন।
আল্লাহ্ হাফেজ।