আমি তো শুধু টাইপিং করতে জানি, আমি কি অনলাইন থেকে টাইপিং এর মাধ্যমে টাকা আয় অর্থাৎ টাইপিং করে আয় করতে পারবো? এমন প্রশ্ন শোনা যায় অনলাইন জগতে আসা নতুন কিছু ফ্রিল্যান্সার এর মুখে।
জ্বি হ্যাঁ আপনি টাইপিং এর মাধ্যমে অনেক পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারেন। আজকে আমরা এমন কিছু কৌশল জানবো যার মাধ্যমে টাইপিং করে আমরা অনলাইন থেকে হ্যান্ডসাম অর্থ আয় করতে পারবো।
আপনি কম্পিউটার কিংবা মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করেও কিন্তু টাইপিং করে আয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ইচ্ছা আর ধৈর্যশক্তির প্রয়োজন।
তো প্যাচঁ প্যাচঁ না করে বরং মূল কথায় আসা যাক,
প্রথমেই জেনে নিই টাইপিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে হলে আমাদের কি প্রয়োজন পড়বে?
টাইপিং করে আয় করতে নিচের উপাদানগুলো আবশ্যিক।
- একটি কম্পিউটার ডেস্কটপ অথবা ল্যাপটপ যে কোনটা হলেই চলবে, তার মানে ল্যাপটপ নাকি ডেস্কটপ কোনটি ব্যবহার করবেন এটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
- অথবা, একটি স্মার্ট ফোন।
- সাথে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই চলবে।
- আর সেই সাথে কিন্তু আপনার ধৈর্য আবশ্যিক।
তো জানতে পারলাম নিশ্চয় যে অনলাইন থেকে টাইপিং করে আয় করা সম্ভব। এবার দেখবো কিভাবে টাইপিং এর মাধ্যমে অজস্র আয় করা সম্ভব।
প্রথমেই আসি ক্যাপচা টাইপিং এর কথায়,
ক্যাপচা টাইপিং এর মাধ্যমে আয়
আপনি যদি টাইপিং ভাল পারেন তবে আপনার জন্য ক্যাপচা টাইপিং আয়ের অন্যতম একটি মাধ্যম হতে পারে।
বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট থেকে ক্যাপচা টাইপিং এর মাধ্যমে আয় করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে,
- কলটিবাবলো
- ২ ক্যাপচা
- মেগাটাইপারস
- প্রোটাইপারস
আপনি উপরের সাইটগুলো থেকে ভাল পরিমাণ অর্থ আয় করতে পারেন। অনেকেই আছেন যারা শুধু ক্যাপচা টাইপিং এর মাধ্যমে ২৫০ ডলার পর্যন্ত আয় করছেন;
এমনকি অনেক ক্ষেত্রে এর থেকেও বেশি পরিমাণ আয় করে থাকেন।
তবে এ ধরণের কাজ করতে অনেকটা ধৈর্যের দরকার। স্বাভাবিকভাবে অনলাইনের কাজগুলোতে যে শ্রম দিতে হয় তার থেকে কিন্তু বেশি সময় দিতে হয় এখানে।
একেবারেই সহজ হবার কারণে নতুন যারা এটাকে খুব বেশি পছন্দ করেন। তার মানে ক্যাপচা টাইপিং নতুনদের জন্য আদর্শ একটি কাজ।
আপনার হাতে টাইপিং স্পিড যদি বেশি না হয় তবে এ ধরণের কাজ করে পর্যাপ্ত আয় করা কিন্তু সম্ভব হবে না।
তার মানে আপনার টাইপিং স্পিড বেশি হলে আপনি এখান থেকে ভাল পরিমাণ আয় করতে পারবেন।
ডাটা এন্ট্রির মাধ্যমে আয়
ডাটা বলতে কোন তথ্যকে বোঝানো হয়ে থাকে। অপরদিকে, এন্ট্রি বলতে আমরা মূলত বুঝি প্রবেশ করানো।
সুতরাং বলুনতো ডাটা এন্ট্রি বলতে তাহলে কি বুঝাবে? ডাটা েএ মূলত কোথাও কোন ডাটাকে প্রবেশ করানো বলা হচ্ছে।
আমরা উপরে যে ক্যাপচা টাইপিং এর মাধ্যমে আয়ের উপায় জানলাম সেটাও কিন্তু ডাটা এন্ট্রির মধ্যে পড়ে।
তাহলে চলুন এক নজরে দেখে নিই ডাটা এন্ট্রির মধ্যে কোন কোন কাজগুলোকে এন্ট্রি করা যাবে।
- অনলাইন রিচার্স
- ভার্চুয়াল এসিসটেন্ট
- ইমেইল সেন্ড করা এবং রিসিভ করা
- কোন রিপোর্ট থেকে ডাটা কালেক্ট করা
সুতরাং আপনিও যদি নতুন হয়ে থাকেন আর অনলাইন থেকে আয় করতে চান তবে ডাটা এন্ট্রি করে চলার মত অর্থ আয় করতে পারেন।
এডিটিং করে আয়
আপনি এডিটিং ভাল পারেন? অনলাইন থেকে বিভিন্ন পিডিএফ, ইমেজকে দেখে দেখে টাইপ করার মাধ্যমে পর্যাপ্ত অর্থ আয় করতে পারেন।
আপনি বিভিন্ন অডিও ক্লিপ শুনেও সেটাকে লেখায় রুপান্তর করে ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী পিডিএফ করে পাঠাতে পারেন।
প্রুফরিডিং জমা দিয়ে আয়
প্রুফ অর্থ প্রমান আর রিডিং মানে তো জানেনই পড়া। তার মানে প্রুফরিডিং বলতে সাধারণত কোন ডকুমেন্ট এর ভুলগুলোকে ধরিয়ে শুদ্ধ করাকে বোঝানো হয়।
ধরে নিচ্ছি, আপনি বাংলা এবং ইংরেজী দুই ভাষাতেই ভাল লিখতে পারেন। এখন ধরুন অন্য কেউ কোন একটি ফাইল এডিট করে দিয়েছে।
কিন্তু তাতে বেশ কিছু ভুল রয়েছে। আপনি এই ভুলগুলোকে ধরিয়ে দিয়ে সম্পূর্ণ শুদ্ধ করে লিখে দিয়েও ক্লায়েন্টের কাছ থেকে অর্থ আয় করতে পারেন।
তার মানে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের পোস্ট, ম্যাগাজিন, পত্রিকা, বিভিন্ন পিডিএফ ফাইল থেকে বিভিন্ন ভুল সংশোধন করে নতুন করে সেটাকে এডিট করে তুলে ধরাকে প্রুফরিডিং বলা হয়।
ট্রান্সলেশন করে আয়
আপনি যদি মোটামুটি বাংলা এবং ইংরেজী দুই ভাষাতেই পারদর্শী হন তবে ট্রান্সলেশন করেও কিন্তু পর্যাপ্ত আয় করতে পারবেন।
অথবা ধরে নিচ্ছি আপনি আরো কয়েকটি ভাষায় পারদর্শিতা অর্জন করেছেন। এখন কোন এক বিদেশি অন্য ভাষার একটি লেখাকে বুঝতে পারছেন না।
আপনি সেই ভাষাকে ট্রান্সলেট করে ঐ ব্যক্তির মাতৃভাষায় ট্রান্সলেশন করে দিলেন। এতে করে ডকুমেন্ট এর যাবতীয় বিষয় ঐ ব্যক্তি সহজেই বুঝতে পারল।
আর এভাবে আপনি কিছু অর্থ হাতে পেলেন। সুতরাং ট্রান্সলেশন করে কিভাবে আয় করতে হয় আপনি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন?
রিজিউম/সিভি রাইটিং এর মাধ্যমে আয়
আমি ধরে নিচ্ছি আপনি সুন্দর করে আকর্ষণীয় সিভি তৈরী করতে পারেন। অর্থাৎ অনেক ব্যতিক্রমী এবং স্টান্ডার্ড সিভি লিখতে পারেন।
এবার আপনি কোন একটি কোম্পানির ৫০০ শত কর্মীর সিভি তৈরীর প্রজেক্ট নিলেন। প্রতি সিভি ২৫ টাকা দরে ধরে নিলাম।
তাহলে আপনার মোট আয় হতে পারে,
৫০০ * ২৫ = ১২৫০০ টাকা। একটি মাত্র প্রোজেক্ট থেকে যদি এত টাকা আয় করা যায় তবে ভাবুন এর মাধ্যমে আসলে কি পরিমাণ আয় করা যেতে পারে।
তবে মজার বিষয় হল আপনি দিনে গড়ে ৫০ টি সিভি লিখতে পারেন। তাহলে আপনার মোট সময় লাগবে ১০ দিন।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজম্যান্ট এর মাধ্যমে আয়
সারাদিন ফেসবুক চালান তাই তো? আপনি কি জানেন ফেসবুক ব্যবহার করেও আপনি অর্থ আয় করতে পারেন? কি ভাবছেন, এটা মিথ্যা? একেবারেই নয়!
আপনি যে সময় ফেসবুক চালান তার কিছু অংশ ব্যয় করে একটি ভাল মানের গ্রুপ এবং পেইজ ক্রিয়েট করেন।
কিছু সময়ের ব্যবধানে সেটাতে অনেক বেশি ট্রাফিক আনার চেষ্টা করেন। এক সময় সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিজিটর আসা শুরু হলে আপনি এটাকে মনিটাইজ করে আয় করতে পারেন।
আর সেটা সম্ভব না হলে আপনি কোন ক্লায়েন্টের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট ম্যানেজ করেও অর্থ আয় করতে পারেন।
এক্ষেত্রে কাজ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে পেয়ে যাবেন। সেখানে গিয়ে একটি একাউন্ট করে নিজের প্রোফাইল সেটাপ করুন।
অনলাইন সার্ভের মাধ্যমে আয়
আপনি হয়তো অনলাইনে সার্ভের নাম শুনে থাকবেন। এই সার্ভের মাধ্যমে অনেকেই হাজার হাজার টাকা আয় করছেন।
বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে সার্ভের অনেক কাজ পাওয়া যায়। তবে সার্ভের জন্য অন্যান্য দেশ অনেক এগিয়ে । বাংলাদেশে সার্ভের যে কাজ পাওয়া যায় তা সাধারণত অনেক কম বাজেটের।
আর সার্ভে কাজের সংখ্যাও বাংলাদেশে অনেক কম।
আরো পড়ুন,
এটিএম বুথ, এটিএম কার্ড (কার্ড নিয়ে যত কথা!)
বিভিন্ন একাডেমিক রাইটিং এর মাধ্যমে আয়
আপনি টাইপিং ভাল পারেন, অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটকে ঘেটে নিত্য নতুন তথ্যের সমাবেশ ঘটিয়ে সুন্দর সুন্দর শিক্ষণীয় বিষয় তৈরী করে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করতে পারেন।
ব্লগিং করে আয়
আপনার যদি ইন্টারনেট সম্পর্কে ভাল জ্ঞান থাকে সেই সাথে টাইপিং স্পিড মোটামুটি ভাল থাকে তবে ব্লগিং করেও কিন্তু অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন।
তবে ব্লগিং একটি ধীরগতির পেশা। এর মাধ্যমে আয় করতে হলে আপনাকে দীর্ঘ সময় দিয়ে নিজের একটি ওয়েবসাইট/ব্লগ তৈরী করে সেখানে নিয়মিত পোস্ট লিখে অনলাইন থেকে আয় করা সম্ভব।
মনে রাখবেন অনলাইন থেকে টাকা আয় করা কিন্তু বাস্তব জীবনের মতই কঠিন একটি বিষয়।
এখানে যদি পর্যাপ্ত ধৈর্যসহ কাজ না করতে পারেন তবে সফলতা কিন্তু অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
তো বন্ধুরা পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন কেমন!
আল্লাহ হাফেজ।