ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করার সেরা উপায় নিয়ে আজকে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। কেমন আছেন সবাই? আশা করছি মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় ভালো আছেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা একটি প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট খোলার জন্য চিন্তা করে থাকেন। কিন্তু অর্থাভাবে তৈরী করা সম্ভব হয় না স্বাদের ওয়েবসাইট। তাদের জন্যই মূলত আজকে আমাদের আয়োজন। ফ্রিতে হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনেছেন, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একটি ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরী করতে হয় এবং ওয়েবসাইট খোলার বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাবেন এই পোস্টে। চলুন শুরু করা যাক-
মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি
আমি একটি ওয়েবসাইট বানাতে চাই। কিন্তু ওয়েবসাইট তৈরী করার জন্য আমার কাছে কোন কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ নেই।
তাহলে কিভাবে আমি মোবাইল দিয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করতে পারবো। দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই, পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আশা করছি এটি পড়ার পর একটি প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ ফ্রিতেই খুলতে পারবেন। আর সেটাও সম্ভব হবে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে।
ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি
ফ্রি ওয়েবসাইট খোলার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছি আমরা এখানে। সুতরাং আপনি যদি একটি ভালো মানের ওয়েবসাইট খোলার চিন্তা করে থাকেন তবে আপনি কিন্তু সঠিক জায়গায় এসেছেন।
ওয়েবসাইট তৈরি করার নিয়ম
নিজেই ওয়েবসাইট তৈরী করুন সেরা উপায়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। ওয়েবসাইট তৈরি করা ও পরবর্তীয় সময়ের জন্য নিম্নলিখিত নিয়মগুলো অনুসরণ করা প্রয়োজন হতে পারে।
ওয়েবসাইট তৈরির ধাপসমূহ
ওয়েবসাইট কিভাবে তৈরী করে? তার মানে একটি প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট তৈরী করার ধাপসূমহ বিস্তারিত জানাবেন কি? হুম, ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি শীর্ষক আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো ধাপে ধাপে তুলে ধরছি। চলুন দেখে নেওয়া যাক-
- প্রথমে একটি ডোমেইন নির্বাচন করুন। যেহেতু আমরা ফ্রিতে ওয়েবসাইট খোলার বিষয়ে আলোচনা করছি সুতরাং আমাদেরকে একটি নাম নির্বাচন করতে হবে।
- একটি উপযুক্ত ডোমেইন নাম নির্বাচন করার পর আমাদের প্রয়োজন পড়বে একটি হোস্টিং এর। আমরা যেহেতু ফ্রিতে একটি ওয়েবসাইট খুলতে চাই তাই আমাদের হোস্টিং কেনার কোন প্রয়োজন পড়বে না।
- আমাদের মূলত একটি সক্রিয় ইমেইল একাউন্ট প্রয়োজন পড়বে। আপনি একটি প্রফেশনাল মেইল ও ব্যবহার করতে পারেন।
- তাহলে প্রথমে মেইল লগ ইন করে নিন। তারপর ওয়েবসাইট এর প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে খুলে ফেলুন আপনার ফ্রি ওয়েবসাইট।
চলুন আমরা এবার বিষয়টি ধাপে ধাপে দেখে নিই।
প্রথমে আপনার পছন্দনীয় কোন ব্রাউজার ওপেন করুন। সেখানে গিয়ে নিচের লেখাটি অর্থাৎ, blogger লিখে সার্চ করুন। দেখুন আপনার সামনে নিচের ইন্টারফেইসটি চলে আসবে।
আরো পড়ুনঃ
এবার আপনি প্রথম লিংক এ প্রবেশ করুন। যদি আপনার একাউন্ট অর্থাৎ, গুগল একাউন্ট লগইন করা থাকে তবে আপনাকে সরাসরি নিচের মত ইন্টারফেইসে নিয়ে যাবে।
একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন
আপনি কী ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তা নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। আপনার ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য কী? আপনি কাদের কাছে পৌঁছাতে চান? আপনার ওয়েবসাইটে কী ধরনের বিষয়বস্তু থাকবে? এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি ভাল ভিত্তি তৈরি করতে পারেন।
পছন্দ অনুযায়ী ডোমেইন নেম এবং হোস্টিং নির্বাচন করুন
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি অনন্য ডোমেইন নাম নির্বাচন করুন। ডোমেইন নামটি ব্যবহার করে আপনার কাস্টমাররা আপনাকে সহজেই খুঁজে পেতে পারেন।
ডোমেইন এর সাথে সাথে একটি হোস্টিং পরিষেবা নির্বাচন করুন যা আপনার ওয়েবসাইটের যাবতীয় ফাইলকে ধারণ করে রাখবে।
তার মানে, হোস্টিং পরিষেবা আপনার ওয়েবসাইটের ফাইলগুলো সঞ্চয় করবে এবং এর সাহায্যে ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইলে এক্সেস সুবিধা দিবে। আশা করছি বুঝতে পারছেন।
একটি সিএমএস (কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) ব্যবহার করুন
একটি সিএমএস ব্যবহার করে আপনি কোন প্রকার কোডিং জ্ঞান ছাড়াই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।
এই কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে আপনি সহজেই আপনার ওয়েবসাইটের যাবতীয় ফাইলকে মেনইটেইন করতে পারবেন।
সুতরাং আমরা বলতে পারি সিএমএসগুলো আপনাকে ফাইল এক্সেসসহ আরো অন্যান্য বিষয়ে সঠিক নিয়ন্ত্রন দিয়ে থাকে।
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য বিষয়বস্তু যোগ করুন
ডোমেইন এবং হোস্টিং নির্বাচন করার পর আপনার ওয়েবসাইটের জন্য কনটেন্ট যোগ করুন। চেষ্টা করবেন কনটেন্টগুলো যেন অত্যন্ত তথ্যবহুল আর আকর্ষণীয় হয়। আপনার ওয়েবসাইটের সাথে মিল রেখে কনটেন্ট নির্বাচন করার চেষ্টা করবেন। এতে করে এসইওসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আপনার সাইট র্যাংকিং করবে।
আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনগুলিতে প্রদর্শিত করতে এসইও করুন
ডোমেইন এবং হোস্টিং তো নিলাম। সেই সাথে একটি ওয়েবসাইট তৈরীও করা শেষ। এখন কিভাবে এই সাইটকে সবার নিকট পৌঁছাবো। এর জন্যই মূলত আপনাকে একটি কোশল অবলম্বন করতে হবে। এই কৌশল ব্যবহার করে আপনি সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে র্যাংকিং করাতে পারবেন। সুতরাং এসইও হল আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনগুলির ফলাফলের প্রথম পৃষ্ঠায় (SERPs) প্রদর্শিত করার একটি অনন্য প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানো সম্ভব।
আপনার ওয়েবসাইটকে নিরাপদ রাখুন
আপনার ওয়েবসাইটকে হ্যাকিং এবং অন্যান্য অনলাইন আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন, আপনার ওয়েবসাইটের জন্য নিয়মিত সফ্টওয়্যার আপডেট আসলে তা ইনস্টল করুন এবং সেই সাথে একটি নিরাপত্তা প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন।
ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে
ওয়েবসাইট তৈরী করতে চাচ্ছেন কিন্তু বুঝতে পারছেন না যে, ওয়েবসাইট তৈরি করতে কি কি লাগে? তাহলে আপনার জন্য আমাদের এই পোস্টটি অত্যন্ত উপকারী হবে বলে আশা করছি।
কেননা, ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য কি কি সরঞ্জাম প্রয়োজন তা আমরা বিস্তারিত এখানে তুলে ধরছি। চলুন দেখে নিবেন।
- একটি জিমেইল একাউন্ট অবশ্যই তা সক্রিয় হতে হবে।
- একটি ডোমেইন (আপনার পছন্দ অনুযায়ী এবং ফাকা থাকা স্বাপেক্ষে নিতে পারবেন)।
- একটি হোস্টিং (ফ্রি সাইটের ক্ষেত্রে হোস্টিং প্রযোজ্য নয়)।
- সিএমএস তথা কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হতে পারে, ওয়ার্ডপ্রেস অথবা, জুমলা আর না হলে, দ্রুপাল অথবা ম্যাজেন্টো।
- এছাড়াও আপনি কোন ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করেও সাইট ডিভেলপ করতে পারেন।
- ওয়েবসাইট এর বাহ্যিক লেআউটের জন্য একটি সুন্দর থিম। ফ্রি ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে আপনি অসংখ্য ফ্রি থিম পাবেন। গুগল ব্লগারে এমন অসংখ্য ফ্রি থিম রয়েছে।
- ওয়েবসাইটকে ইন্টারএক্টিভ করার জন্য প্লাগিন দরকার। যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন তবে আপনার থিম এর সাথে সাথে প্লাগিন ১০০% প্রয়োজন পড়বে।
- আর একটি বিষয় অত্যন্ত জরুরী তা হচ্ছে আপনার ধের্য শক্তি।
প্রিয় পাঠক, বুঝতে পারছেন নিশ্চয় যে, একটি সুন্দর আর প্রফেশনাল ওয়েবসাইট তৈরী করার জন্য আপনাকে কত বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে।
পরিশেষে
ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করুন সেরা উপায়ে শীর্ষক আলোচনা নিশ্চয় আপনার ভালো লেগেছে। তাহলে বন্ধুদের সাথে একটু শেয়ার করে দিন তো।
দেখা হবে আপনার সাথে নতুন কোন বিষয় নিয়ে অন্য কোন এক দিন। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। আল্লাহ্ হাফেজ।