web-hosting

হোস্টিং কি? ওয়েব হোস্টিং কেন প্রয়োজন?

  • Post author:

প্রিয় বন্ধুরা আসসালামুআলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আজকে আমরা হোস্টিং কি? ওয়েব হোস্টিং কেন প্রয়োজন তার খুঁটিনাটি জানবো ইনশাআল্লাহ্। সাথে আছেন তো? চলুন ওয়েবসাইট হোস্টিং কি? কেন আমাদের হোস্টিং প্রয়োজন তা বিশদভাবে জেনে নিই।

হোস্টিং কি (What is Hosting?)

Hosting এমন এক ধরণের বিশেষ স্পেস তথা জায়গা যেখানে শত শত নয় হাজার হাজার ফাইল রেখে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে তাতে এক্সেস নেওয়া যায়। একটি ওয়েবসাইট তৈরীর জন্য ডোমেইন নেইম যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি হোস্টিংও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বলতে গেলে, ডোমেইন ছাড়া যেমন ওয়েবসাইট সম্ভব নয় তেমনি হোস্টিং ছাড়াও ওয়েবসাইট সম্ভব হয় না।

Hosting কত প্রকার ও কি কি?

হোস্টিং এর প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করো। ঠিক আছে, হোস্টিং মূলত দুই প্রকার: ১। ফ্রি হোস্টিং ২। পেইড হোস্টিং। পেইড হোস্টিংকে আবার নিম্নোক্ত ভাগে ভাগ করা হয়।

শেয়ার্ড হোস্টিং (Shared Hosting)

এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী মূল্যের হোস্টিং পদ্ধতি। একই সার্ভারে একাধিক ওয়েবসাইট হোস্ট করা হয়।

আরো পড়ুনঃ ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করুন সেরা উপায়ে – Free Website

এই কারণে, শেয়ার্ড হোস্টিং প্ল্যানগুলিতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যেমন রিসোর্স ব্যবহারের উপর সীমা, ব্যান্ডউইডথ সীমা, ইত্যাদি।

শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের সুবিধাগুলি:

  • সাশ্রয়ী মূল্য
  • সহজে ব্যবহারযোগ্য
  • দ্রুত সেটআপ

শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের অসুবিধাগুলি:

  • অন্যান্য ওয়েবসাইটগুলির কর্মক্ষমতার উপর প্রভাব
  • রিসোর্স ব্যবহারের উপর সীমাবদ্ধতা

ভিপিএস হোস্টিং (VPS Hosting)

শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের মতোই, ভিপিএস হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রেও একাধিক ওয়েবসাইট একই সার্ভারে হোস্ট করা হয়। তবে, ভিপিএস হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে, প্রতিটি ওয়েবসাইটকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রিসোর্স বরাদ্দ করা হয়। এটি শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মক্ষমতা প্রদান করে।

ডেডিকেটেড হোস্টিং (Dedicated Hosting)

এটি সবচেয়ে উন্নত এবং ব্যয়বহুল হোস্টিং পদ্ধতি। একটি সম্পূর্ণ সার্ভারের জন্য একটি একক গ্রাহককে বরাদ্দ করা হয়। এটি সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মক্ষমতা প্রদান করে।

রিসেলার হোস্টিং (Reseller Hosting)

এই হোস্টিং প্ল্যানগুলি এমন ব্যবসার জন্য উপযুক্ত যা অন্যান্য ব্যবসায়ীদের হোস্টিং পরিষেবা বিক্রি করতে চায়। রিসেলাররা হোস্টিং প্রদানকারীর কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রিসোর্স কিনতে পারে এবং তারপর সেই রিসোর্সগুলি অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে পারে। তারমানে, ধরুন আপনার কোন কাপড়ের দোকান আছে, আপনি সেই দোকানে কি করেন? নিশ্চয় কাপড় বিক্রি করেন। তাই নয় কি! এখন এই কাপড় আপনি কোথা থেকে নেন? নিশ্চয় বড় কোন দোকান থেকে যেখানে পাইকারী কাপড় পাওয়া যায়। এই যে পাইকারী শব্দটা আমরা ব্যবহার করছি এটাই মূলত হোস্টিং এর ক্ষেত্রে রিসেলার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ক্লাউড হোস্টিং (Cloud Hosting)

এটি একটি নতুন হোস্টিং প্রযুক্তি যা বিভিন্ন সার্ভারের একটি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ওয়েবসাইটগুলি হোস্ট করে। ক্লাউড হোস্টিং শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের মতো সাশ্রয়ী মূল্যের এবং ডেডিকেটেড হোস্টিংয়ের মতো দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য।

আপনার ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে আপনি আপনার জন্য উপযুক্ত হোস্টিং পদ্ধতি নির্বাচন করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্লগ সাইট – Best Blog Site Bangladesh

নিচে প্রতিটি হোস্টিং পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হল:

VPS Hosting (ভিপিএস হোস্টিং)

ভিপিএস হোস্টিং হল শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের একটি উন্নত সংস্করণ। শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের মতোই, একই সার্ভারে একাধিক ওয়েবসাইট হোস্ট করা হয়। তবে, ভিপিএস হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে, প্রতিটি ওয়েবসাইটকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রিসোর্স বরাদ্দ করা হয়। এটি শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মক্ষমতা প্রদান করে।

VPS Hosting এর সুবিধা:

  • আরও নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মক্ষমতা
  • শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি নিরাপত্তা

ভিপিএস হোস্টিংয়ের অসুবিধা:

  • শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল
  • সেটআপ এবং পরিচালনা করা কঠিন হতে পারে

ডেডিকেটেড হোস্টিং

ডেডিকেটেড হোস্টিং হল সবচেয়ে উন্নত এবং ব্যয়বহুল হোস্টিং পদ্ধতি। এখানে একটি একক কম্পিউটারকে সার্ভার হিসেবে একটি ওয়েবসাইট কিংবা ঠিকানার যাবতীয় ফাইল সংরক্ষিত থাকে। শেয়ার হোস্টিং এর মত এখানে অনেক সাইটকে সংরক্ষন করা হয় না। তাই এটি অত্যন্ত নিরাপদ হোস্টিং ব্যবস্থা।

ওয়েব হোস্টিং কেন প্রয়োজন?

হোস্টিং কেন প্রয়োজন? এতক্ষনে নিশ্চয় ধারণা পেয়েছেন যে কেন আপনার ওয়েব হোস্টিং দরকার। আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট থাকে, তবে অবশ্যই আপনার হোস্টিং প্রয়োজন পড়বে। কেননা, হোস্টিং ছাড়া এই ফাইলগুলোকে আপনি রাখবেনই বা কোথায় আর বিশ্বব্যাপী তা প্রচার হবেই বা কি করে? অর্থাৎ, আপনার ওয়েবসাইটকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করতে হলে এমন কোন জায়গায় রাখতে হবে যেখান থেকে রিসোর্স ব্যবহার করে সবাই অনলাইনের মাধ্যমে আপনাকে খুঁজে পায়। সুতরাং হোাস্টিং আবশ্যিক একটি বিষয়। আপনি বলতে পারেন, ভাই আমি তো গুগল  ব্লগারে সাইট চালাই। আমার তো হোস্টিং প্রয়োজন নাই। জি, আপনাকে হোস্টিং কিনতে হবে না ঠিকই কিন্তু গুগল আপনার ফাইলগুলো কোথায় রাখে বলুন তো। এই ফাইলগুলো কিন্তু গুগল এর সার্ভার থেকে লোড হয়। এবার বুঝতে পারছেন নিশ্চয়।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর সমূহ

এ পর্যায়ে আমরা হোস্টিং সম্পর্কে বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর সম্পর্কে জানবো ইনশাআল্লাহ্।

হোস্টিং ও হোস্টিং সার্ভার কি এক?

জি, হোস্টিং এবং হোস্টিং সার্ভার একই বিষয়।

হোস্ট নেম কি?

হোস্ট নেম যাকে নোডনামও বলা হয় তা হচ্ছে, এক ধরণের লেবেল যা সাধারণত একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে জড়িত কোন একটি ডিভাইসের জন্য নির্ধারণ করা হয়।

আরো পড়ুনঃ গুগল নিয়ে যত প্রশ্ন-উত্তর (একই জায়গায় অনেক তথ্য)

ওয়েব পোর্টাল কি

ওয়েব পোর্টাল হচ্ছে এক ধরণের ওয়েবসাইট যেখানে বিশেষ উপায়ে সাজানো মানসম্মত অনেক কনটেন্ট থাকে।

পরিশেষে

আলোচনার শেষ পর্যায়ে বলা যায়, একটি ওয়েবসাইট এর জন্য ডোমেইন যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি ওয়েবসাইট এর সকল তথ্যকে সংরক্ষিত রাখার জন্য ওয়েব হোস্টিং আবশ্যিক। একটি ওয়েবসাইট তখনই সম্ভব হবে যখন তার নাম থাকবে এবং ফাইল সংরক্ষনের জন্য হোস্টিং থাকবে। প্রিয় পাঠক, পোস্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন আপনার মূল্যবান মতামত। আল্লাহ হাফেজ।

Author

Leave a Reply