অ্যামাজন-অ্যাফিলিয়েট-মার্কেটিং

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি, কেন ও কিভাবে?

  • Post author:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমান সময়ের অন-ডিমান্ডিং আয়ের সেক্টর। মূলত ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বিশেষ শাখা হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যামাজন ওয়েবসাইটকে ব্যবহার করে যখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা হয় তখন তাকে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হিসেবে ধরা হয়।

আজকে আমরা অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো। কি! অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে চাচ্ছেন?

ভাল কোন গাইডলাইন পাচ্ছেন না? খুব দুশ্চিন্তায় আছেন যে কিভাবে অনলাইন থেকে আয় করা যাবে? থাক! আপনাকে আর ভেবে সময় নষ্ট করতে হবে না।

পড়তে থাকুন আর একটু গবেষণা করতে শিখুন। দেখুন অন্য কেউ যদি এই একই সেক্টর থেকে প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করে থাকে তবে আপনি পারবেন না কেন?

আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম শাখা অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করতে ব্যর্থ হন তবে বুঝতে হবে আপনার কোন প্রসেস ভুল হচ্ছে।

লেগে থাকার মানসিকতা তৈরী করুন। কঠিন ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে যান। আশা করছি সফল হবেনই আজ অথবা কাল।

বহুত প্যাচ প্যাচ করা হলো। এবার মূল কথায় চলে আসি। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কিভাবে আয় করা যায়?

আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত না  বুঝে থাকেন তবে এখান থেকে ঘুরে আসুন।

তাহলে চলুন এবার দেখে নেয়া যাক অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আসলে কি?

 

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Amazon Affiliate Marketing)

অ্যামাজনকে আমরা মূলত একটি অনলাইন শপিং কিংবা ইকমার্স ওয়েবসাইট বলে থাকি।

অ্যামাজনের কোন পণ্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রয় করা হলে তাকেই আমরা অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে পারি।

অন্যের কোন প্রোডাক্ট নির্দিষ্ট কিছু কমিশনের ভিত্তিতে বিক্রয় করার মাধ্যমে মূলত আয় হয়। এক্ষেত্রে যদি অ্যামাজনে থাকা কোন পণ্য আমরা বিক্রয় করতে পারি তবে আমাদের কমিশন ভিত্তিক কিছু আয় হবে।

তবে এরূপ ক্ষেত্রে মজার বিষয় হল আমাদের কিন্তু নিজস্ব কোন পণ্য থাকতে হচ্ছে না। পণ্য অন্য কারো কিন্তু বুদ্ধি খাটিয়ে তা সেল করে দেয়া আমরা যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার তাদের দায়িত্ব।

ধরুন,

আপনি অ্যামাজনের একটি পণ্য ১০০০ ডলার দিয়ে সেল করালেন। এখন এর জন্য ৭% কমিশন বরাদ্দ ছিল। তাহলে হিসেব মত আপনার প্রাপ্য অ্যামাউন্ট আসবে,

১০০০ * ৭ / ১০০ = ৭০ ডলার যা বাংলাদেশি প্রায় ৭০০০ টাকার সমান।

এখন কথা হচ্ছে এত সহজেই কি আয় করা সম্ভব। না অনেক বেশি পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই কিন্তু আয় করতে হয়।

এক্ষেত্রে আমাদেরকে,

প্রোডাক্ট বিক্রয়ের জন্য কোন ধরণের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে হবে?

পণ্যের প্রচারণা করার জন্য নিচের প্লাটফর্মগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

  • ইউটিউব চ্যানেল  (Create Youtube Channel)
  • ইমেইল মার্কেটিং করে ( Using E-mail Marketing)
  • সোশ্যাল মিডিয়া পেজ তৈরির মাধ্যমে (Social Media Page Create)
  • ব্লগ পোষ্টে আর্টিকেল লেখা (Article Writing in Blog)

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগদান করবো কিভাবে?

প্রথমে অ্যামাজন এসোসিয়েটস এ যান। অতপর সেখান থেকে পেজ স্ক্রল ডাউন করে নিচের দিকে যান। নিচের মত একটি অংশ দেখতে পাবেন।

 

অ্যামাজন-সাইন-আপ

 

অতপর এখান থেকে সাইন-আপ নামে যে বাটনটি দেখতে পাচ্ছেন তাতে লাফ মারুন। এবার দেখবেন নিচের মত একটি পেজ চলে আসছে।

 

অ্যামাজন-সাইন-ইন

 

এখান থেকে এ গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে জয়েন করতে পারেন।

আপনি এখানে থাকা সাইন-ইন বাটনে গিয়েও কিন্তু নতুন একাউন্ট করতে পারবেন।

 

অনলাইনে থাকা হাজারো প্রোগ্রামের মধ্যে অ্যামাজন কেন?

দেখুন সহজেই যদি আয় করা সম্ভব হয় তবে তা কে না করতে চায় বলুন। অ্যামাজন অনেক বিশ্বস্ত একটি নেটওয়ার্ক।

অনলাইন থেকে আয়ের জন্য অনেক অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট আছে। কিন্তু এগুলোর মধ্যে অ্যামাজনই কেন সেরা তা বোঝার জন্য একটু তাদের লগো এর দিকে নজর দিন।

a থেকে z পর্যন্ত একটি সংকেত রেখা টানা হয়েছে। এর মানে এটাই যে এখানে আপনি সব ধরনের পণ্যই পেয়ে যাবেন।

আর সেই সাথে ইচ্ছেমত মার্কেটিং করে আয় করতে পারবেন। তাহলে চলুন একটু সংক্ষিপ্ত পরিসরে জানার চেষ্টা করি আসলে কোন বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে অ্যামাজন সেরা থেকেও সেরা।

  • অনলাইনের সবথেকে বিশ্বস্ত একটি ওয়েবসাইট যাদের শতভাগ ভাল রেপ্যুটেশন রয়েছে।
  • সকল ধরণের পণ্য এখানে পেয়ে যাবেন যার মাধ্যমে মার্কেটিং করতে পারবেন সহজে।
  • প্রতারণার শিকার হওয়ার কোন সুযোগই থাকছে না।
  • এখানে সকল দেশের ট্রাফিক আসে। তার মানে ট্রাফিক সংখ্যা বেশি। এর আর এক অর্থ হচ্ছে যত ট্রাফিক তত বেশি আয়ের সম্ভাবনা।
  • প্রচার করা পণ্য থেকেই যে আয় হবে এমন নয়। আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক ধরে যদি কেউ ২৪ ঘন্টায় যে কোন পণ্য ক্রয় করে থাকে সেখান থেকেও আপনি কমিশন পেয়ে যাবেন।

সুতরাং আর কত সুবিধা চাচ্ছেন বলুন। মূলত এর মাধ্যমে অনেকেই আছেন যারা লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন প্রতি মাসে।

 

ভাই শুনছিলাম,

অ্যামাজন নাকি কমিশন কম দেয় তাহলে উপায়?

অনেক ক্ষেত্রে দেখবেন কাস্টমার বেশি হলে বিক্রয় থেকে কমিশন কম আসলেও বেশি সেলের কারণে আয়ের মাত্রা বেশি হয়।

অ্যামাজন অনেক বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট এবং এখানে ঠকার কোন সম্ভাবনাই নেই তাই অনেক বেশি ট্রাফিক এখানে আনাগোনা করে।

আর যেখানে ট্রাফিক বেশি আসবে সেখানে আয়ের মাত্রা তো বেশি হবেই, তাই নাহ?

আপনি প্রচার করা পণ্য থেকেই কিন্তু আয় করতে পারছেন এমন না। কেউ ২৪ ঘন্টায় আপনার লিংক ধরে অ্যামাজনে গিয়ে পণ্য ক্রয় করলে তা থেকেও আপনি কমিশন পেয়ে যাবেন।

এটা কিন্তু অন্য অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।

 

কিভাবে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়? 

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আহামরি কঠিন কোন বিষয় নয়। পর্যাপ্ত ধৈর্য এবং লেগে থাকার মানসিকতা তৈরী করুন। 

আজ ব্যর্থ আবার আগামীকাল ব্যর্থ হলেই যে আশা ছেড়ে দিবেন তা কিন্তু করা যাবে না। হয়তো চেষ্টা করতে করতে এক পর্যায়ে সফল হবেনই ইনশাআল্লাহ্।

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে অবশ্যই দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। মার্কেটিং স্ট্রাটেজি অনুসরণ করতে হবে।

নিয়মিত কাস্টমার সাপোর্টসহ বেশি বেশি ফ্রেন্ড ফলোয়ার বাড়াতে থাকেন। কোন একটি নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট নিয়ে রিচার্স করা খুব সম্ভবত বেটার অপশন।

মার্কেটে বেশি বেশি সময় দিতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া পেইজে নিয়মিত এক্টিভ থাকার চেষ্টা করুন।

যে প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন তার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন। সকল ক্ষেত্রে বৈধ পন্থা অবলম্বন করুন। 

যদি ব্লগ নিয়ে কাজ করে থাকেন তবে ব্লগে নিয়মিত পোস্ট করতে থাকেন। আবার যদি ইউটিউব নিয়ে কাজ করেন তবে নিয়মিত প্রোডাক্ট সম্পর্কিত ভিডিও তৈরী করুন।

এখানে সীমাহীন আয়ের সুযোগ রয়েছে। আর সেই সাথে খুব সহজে শুরু করা যায় বলে অনেকেই এটি পছন্দ করে থাকেন।

যদি আপনি ই-মেইল মার্কেটিং ভাল পারেন তো এর মাধ্যমেও চেষ্টা করে দেখতে পারেন। সব সময় মার্কেটে সময় দিন।

রিচার্স করুন। এক্সপার্টদের অনুসরণ করুন। আপনার লেখা প্রোডাক্ট রিভিউএ সর্বোচ্চ তথ্য দেবার চেষ্টা করুন।

এমন কোন তথ্য দিবেন না যা আপনার প্রোডাক্টের বিপরীতে চলে যায়। অতি চাঞ্চল্যকর তথ্য না দিয়ে বরং সঠিক এবং যথোপযুক্ত তথ্য প্রদান করুন।

 

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কেমন?

যেখানে এত এত সংখ্যক ট্রাফিক প্রতিটা সময় আনাগোনার মধ্যে থাকে সেখানে ব্যবসা নিশ্চয় ভাল হবার কথা। 

আর আমরা জানি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত কাস্টমার নিয়ে ব্যবসা। সুতরাং যত বেশি সংখ্যক ট্রাফিক তত বেশি সংখ্যক আয় করা সম্ভব।

এবার আসি অনেক কষ্টে তো অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শিখলাম অথবা শিখবো বলে ভাবছি।

তো তার আগে একটু জানার চেষ্টা করি যে এর ভবিষ্যৎ আসলে কেমন?

তার মানে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কি হতে পারে? এর থেকে কি পরিমাণ আয় করা যেতে পারে?

কতটা সময় ব্যাপী এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কার্যকর থাকবে। অ্যামাজন এর কোন প্রোডাক্ট সেলের মাত্রা অনেক বেশি।

আপনি দেখুন যেখানে এত বেশি সংখ্যক মানুষ কেনাকাটায় ব্যস্ত। দিনের পর দিন প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে মানুষ ঘরে বসেই কেনাকাটা করছে।

অদূর ভবিষ্যতে প্রযুক্তি যে আরো এগিয়ে যাবে এটা বলার অপেক্ষায় রাখে না। সুতরাং প্রযুক্তির অগ্রগতি অবশ্যই অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কে অনেক দূর এগিয়ে নিবে।

একজন কৌশলী মার্কেটার হতে পারলে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি অনেক বেশি পরিমাণ আয় করতে পারেন।

এখানে আয়ের নির্ধারিত কোন সীমানা নেই। আপনি যতটা চালাক হবেন, সময় দিতে পারবেন আপনার আয় ততটায় বেশি হবে।

একটি ভাল মানের ট্রাফিক সোর্স তৈরী করুন। নিজের অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট বেশি বেশি প্রচার করুন। 

আর আশা করছি এর ফলে কাঙ্খিত কাস্টমার পেয়ে যাবেন। আপনার পকেট গরম হয়ে যাবে। এখানে অনেক অনেক প্রোডাক্ট, খুব বেশি জনপ্রিয়তা,

সেই সাথে নির্দিষ্ট পণ্যের বাইরে অন্য পণ্য সেল হলেও আয়ের সম্ভাবনা সব মিলিয়ে আমরা বলতে পারি অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ অতি উজ্জল।

 

আপনি পছন্দ করতে পারেন,

৩০ হাজার বাজেটের ল্যাপটপ (সেরা ব্র্যান্ড নির্বাচন)

ই-পাসপোর্ট কি? ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

 

তো বন্ধুরা আজ আর নয় দেখা হবে জীবন আর প্রযুক্তির নতুন কোন আলোচনায়। 

আল্লাহ্ হাফেজ।

Author

Leave a Reply