মেশিন লার্নিং ও ডিসটেন্স লার্নিং

ডিসটেন্স লার্নিং এবং মেশিন লার্নিং সম্পর্কে জানতে চাই

  • Post author:

হ্যাল্লো এভরিওয়ান! কেমন আছেন সবাই? আশা করছি মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় ভাল আছেন। আজকে আমরা ডিসটেন্স লার্নিং ও মেশিন লার্নিং এর খুঁটিনাটি জানার  চেষ্টা করবো। সাথে থাকবেন তো? চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক মেশিন লার্নিং আর ডিসটেন্স লার্নিং এর তফাৎ-

ডিসটেন্স লার্নিং কী এবং এর পরিচিতি

Distance Learning হল এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষকরা শারীরিকভাবে একসাথে না থেকেই শিক্ষাদান এবং শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকেন।

এই শিক্ষা ব্যবস্থায়, শিক্ষার্থীরা সাধারণত টেলিভিশন, ইন্টারনেট, ভিডিও কনফারেন্সিং বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক যোগাযোগের মাধ্যমে শিক্ষকদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে।

ডিসটেন্স লার্নিং-এর ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৯ শতকে, দূরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের জন্য পত্রপত্রিকার মাধ্যমে শিক্ষাদানের প্রচলন শুরু হয়।

এরপর, ২০ শতকে রেডিও, টেলিভিশন এবং ভিডিওটেপের মাধ্যমে ডিসটেন্স লার্নিং-এর পরিধি বৃদ্ধি পায়।

আর বর্তমানে, ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে ডিসটেন্স লার্নিং একটি জনপ্রিয় শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে।

চলুন এবার আমরা ধারাবাহিকভাবে, এর সুবিধাসমূহ দেখে নিই। ডিসটেন্স লার্নিং-এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

আরো পড়ুনঃ API কি? উদাহরণসহ এপিআই এর প্রয়োজনীয়তা

  • শিক্ষার্থীরা যেকোনো স্থান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। হতে পারে তা নিজ বাড়ি, স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য বিনোদনের জায়গা।
  • শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব সময় এবং সুবিধামতো শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
  • শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের খরচ কম হয়। কেননা তাদেরকে নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে শিক্ষা গ্রহন করতে হয় না।

তবে, ডিসটেন্স লার্নিং-এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

  • শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষকদের মধ্যে যোগাযোগের সমস্যা হতে পারে। প্রত্যক্ষ আর পরোক্ষ বলে একটা কথা আছে। পরোক্ষ শিক্ষাব্যবস্থা শতভাগ নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারে না।
  • শিক্ষার্থীদের একা একা কাজ করার অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে।

তবে, ডিসটেন্স লার্নিং-এর পরিচিতি বাংলাদেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে বেশ কিছু সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডিসটেন্স লার্নিং প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। আমাদের শুভাকাঙ্খী প্রতিষ্ঠান আতিক একাডেমি থেকেও ডিসটেন্স লার্নিং এর মাধ্যমে অনেকেই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, আইটি প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্যাকেজ প্রশিক্ষণসহ নানান প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। চাইলে আপনিও যোগাযোগ করতে পারেন।

এছাড়াও, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসটেন্স লার্নিং প্রোগ্রাম বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশে ডিসটেন্স লার্নিং-এর কিছু উদাহরণ হল-

  • বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
  • জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন একাডেমি
  • ব্রিটিশ কাউন্সিল
  • ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন

ডিসটেন্স লার্নিং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি দেশের দূরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিচ্ছে।

এছাড়াও, এটি দেশের শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে বিশেষ সহায়তা করছে।

মেশিন লার্নিং কী এবং এর পরিচিতি

Machine Learning হল কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা যা কম্পিউটারকে ডেটা থেকে শিখতে এবং মানিয়ে নিতে সহায়তা করে।

মেশিন লার্নিং মডেলগুলোকে বিভিন্ন ডেটাতে পাঠানো হয় এবং তারা সেই ডেটা থেকে প্যাটার্ন এবং সম্পর্ক শিখে থাকে।

এই প্যাটার্ন ব্যবহার করে, মডেলগুলো নতুন ডেটাতে ভবিষ্যতের আচরণের পূর্বাভাস দিতে পারে বা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মেশিন লার্নিং এর বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। এটি ব্যবহার করা যেতে পারে-

  • চিত্র এবং ভিডিও বিশ্লেষণ
  • ভাষা অনুবাদ
  • ক্রেডিট স্কোরিং
  • পরিষেবা গ্রাহক বিশ্লেষণ
  • স্বয়ংক্রিয় যানবাহন

মেশিন লার্নিং এর ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৯৫০-এর দশকে, অ্যালগরিদমের একটি নতুন সেট তৈরি করা হয়েছিল যা ডেটা থেকে শিখতে পারে।

এই অ্যালগরিদমগুলির মধ্যে রয়েছে লাইনয়ার রিগ্রেশন, নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং ক্লাস্টারিং।

আরো পড়ুনঃ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি? কেন, কিভাবে? (জানুন বিস্তারিত)

১৯৮০-এর দশকে, মেশিন লার্নিং-এ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছিল। এই সময়ে, আরও শক্তিশালী কম্পিউটার এবং আরও ডেটা সহজলভ্য হয়ে ওঠে।

এটি মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমকে আরও জটিল এবং কার্যকর করতে সক্ষম করে। ১৯৯০-এর দশকে, মেশিন লার্নিং-এর আরও বিকাশ ঘটে।

এই সময়ে, ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে আরও বেশি ডেটা উপলব্ধ হয়ে ওঠে। এছাড়াও, আরও শক্তিশালী কম্পিউটার এবং আরও উন্নত অ্যালগরিদম এর বিকাশ মেশিন লার্নিং-এর ব্যবহারকে আরও ব্যাপক করে তোলে।

২০০০-এর দশকে, মেশিন লার্নিং-এ আরও বিপ্লব ঘটে। এই সময়ে, বৃহৎ ডেটাসেটগুলোর বিকাশ মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদমকে আরও কার্যকর করে তোলে। এছাড়াও, আরও উন্নত অ্যালগরিদম এর বিকাশ মেশিন লার্নিং-এর ব্যবহারকে আরও জটিল এবং উদ্ভাবনী করে তোলে।

বর্তমানে, মেশিন লার্নিং একটি দ্রুত বর্ধনশীল ক্ষেত্র। মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ক্রমাগত উন্নত হচ্ছে এবং আরও বেশি সংখ্যক অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার করা হচ্ছে। মেশিন লার্নিং-এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হল-

ডেটা

মেশিন লার্নিং মডেলগুলো ডেটা থেকে তথ্য গ্রহন করে থাকে এবং ভালোভাবে তা শিখে নেয়। তাই ডেটাটি যত বেশি নির্ভুল এবং প্রাসঙ্গিক হবে, মডেলটি তত ভাল হবে।

অ্যালগরিদম

মেশিন লার্নিং মডেলগুলো অ্যালগরিদম ব্যবহার করে ডেটা থেকে শিখে। অ্যালগরিদমগুলি বিভিন্ন ধরণের প্যাটার্ন এবং সম্পর্ক সনাক্ত করতে পারে।

স্কেলিং

Machine Learning মডেলগুলোকে বড় ডেটাসেটে স্কেল করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি করার জন্য, মডেলগুলোকে সাধারণত ভারসাম্যপূর্ণ এবং প্রশিক্ষিত হতে হবে।

মেশিন লার্নিং একটি শক্তিশালী সরঞ্জাম যা আমাদের জীবনকে অনেকভাবে উন্নত করতে পারে। এটি আমাদের ডেটা থেকে শিখতে এবং নতুন সমস্যাগুলো সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে।

মেশিন লার্নিং মূলত হচ্ছে ডাটা সাইন্স এর  একটি অংশ। এটি এমন একটা প্রযুক্তি যা আধুনিক প্রযুক্তির কঠিন সব বিষয়কে খুবই সহজ করে দিয়েছে। ফলে তথ্য আহরণ করা অনেকটায় সহজ হয়ে গেছে। আমাদের জীবনযাত্রা অনেকটায় সহজ ও আরামদায়ক হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ ন্যানো টেকনোলজি কি – সুবিধা অসুবিধাসহ জানুন বিস্তারিত

মানুষ যেমন তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে শিক্ষতে পারে। ঠিক তেমনি মেশিন লার্নিং এর কারণে বর্তমানে কম্পিউটারও মানুষের মতো শিখতে পারছে অনেক কিছু। তবে এখানে পার্থক্য হচ্ছে মানুষ বুদ্বিমত্তার কারনে শিখে আর কম্পিউটার ডাটা দিয়ে শিখে নিতে পারে। সহজ ভাষাই বলতে গেলে মেশিন লানিং মেশিনকে ভাবতে শেখায় মানুষের মতন করে।

মন্তব্য

এতক্ষণ আলোচনার পর নিশ্চয় ডিসটেন্স লার্নিং ও মেশিন লার্নিং সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারছেন। আপনি যদি এ বিষয়ে নতুন কোন তথ্য জেনে থাকেন তবে আমাদেরকেও কমেন্ট করে জানিয়ে দিন আপনার মূল্যবান মতামত। সেই সাথে কেমন লাগলো আপনার এই পোস্টটি তা জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!

Author

Leave a Reply