ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কি কি – আয়রন ও ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার

  • Post author:

প্রিয় পাঠক কেমন আছেন সবাই? আশা করছি মহান আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ভালই আছেন। আজকে আমরা ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কি কি তথা ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের সামনে। তাই বলে আবার ভাববেন না যে, আমি খাবার দেবো! চলুন তাহলে শুরু করি ক্যালসিয়াম যুক্ত সবজি সম্পর্কে জানা যাক-

পোস্ট সূচিপত্র

ক্যালসিয়াম কি? (What is Calcium?)

ক্যালসিয়াম একটি মৌলিক পদার্থ, যার প্রতীক Ca এবং পারমাণবিক সংখ্যা ২০। এটি পর্যায় সারণীর দ্বিতীয় গ্রুপে অবস্থিত এবং একটি ক্ষারীয় ধাতব। ক্যালসিয়াম প্রকৃতিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এবং এটি পৃথিবীর ভূত্বকের তৃতীয় সর্বাধিক প্রচুর পরিমাণে মৌল। সেই সাথে, ক্যালসিয়াম একটি নরম, রূপালী-সাদা ধাতু যা দ্রুত অক্সিডাইজ হয়ে একটি ধূসর আবরণ তৈরি করে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের শীর্ষ দর্শনীয় স্থান – সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান

মানবদেহে ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এটি হাড় ও দাঁতের প্রধান উপাদান এবং রক্ত ​​সঞ্চালন, পেশী সংকোচন, স্নায়ু সংকেত এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলোর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

ক্যালসিয়াম ঘাটতির লক্ষণ সমূহ

মানবদেহে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে

  • অস্টিওপোরোসিস
  • দাঁতের ক্ষয়
  • পেশী খিঁচুনি 
  • হৃদস্পন্দনের অনিয়মসহ

আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ক্যালসিয়ামের উৎস

ক্যালসিয়ামের ভালো উৎসের মধ্যে রয়েছে দুগ্ধজাত খাবার, যেমন দুধ, দই, পনির; পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি, যেমন পালংশাক, ব্রকোলি এবং ক্যালসিয়াম-ফর্টিফাইড খাবার, যেমন সয়া দুধ, চালের দুধ, প্রাতঃরাশের সিরিয়াল ইত্যাদি। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ক্যালসিয়ামের দৈনিক সুপারিশকৃত পরিমাণ ১০০০ মিলিগ্রাম।

ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার কি কি?

ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবারগুলো হচ্ছে এমন খাবার যাতে কম বা বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম নামক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে। আর আপনি ইতোমধ্যেই জেনে গেছেন যে, ক্যালসিয়াম হল হাড় এবং দাঁতের প্রধান উপাদান  এবং শরীরবৃত্তিয় অনেক কাজের অন্যতম একটি মাধ্যম। তাই ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে-

  • দুগ্ধজাত খাবার যেমন, দুধ, দই, পনির, ওয়াটারমিল্ক, ছানা, ক্রিম, চর্বিহীন দুধ, সোয়ে দুধ এ প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
  • পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি যেমন, পালংশাক, ব্রকোলি, বাঁধাকপি, পাতাযুক্ত লেটুস, তিল, সরিষা পাতা, বাদামী চাল এ অনেক ক্যালসিয়াম থাকে।
  • সামুদ্রিক খাবার, শুকনো ফল, বাদাম, বীজেও কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

Calcium যুক্ত খাবারগুলো আপনার দৈনিক ক্যালসিয়াম চাহিদা পূরণ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে

ক্যালসিয়াম যুক্ত সবজি

Calcium যুক্ত সবজিগুলি হল এমন সবজি যাতে ক্যালসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ক্যালসিয়াম হল হাড় এবং দাঁতের প্রধান উপাদান, এবং এটি রক্ত ​​সঞ্চালন, পেশী সংকোচন, স্নায়ু সংকেত এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলির জন্য প্রয়োজনীয়। ক্যালসিয়াম যুক্ত সবজিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

পালংশাক

পালংশাক হল ক্যালসিয়ামের সবচেয়ে ভালো উৎস। এক কাপ রান্না করা পালংশাক ২৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ধারণ করে।

ব্রকোলি

ব্রকোলি হচ্ছে, ক্যালসিয়ামের আরেকটি ভালো উৎস। এক কাপ রান্না করা ব্রকোলি এর মাঝে ১০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।

পাতাকপি

পাতাকপি খেয়েছেন নিশ্চয়? ক্যালসিয়ামের আরেকটি ভালো উৎস হচ্ছে এই পাতাকপি। এক কাপ রান্না করা পাতাকপি প্রায় ৯০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে।

কলার্ড সবুজ শাক

কলার্ড সবুজ শাক এর নাম শুনেছেন নিশ্চয়? ক্যালসিয়ামের আরেকটি ভালো উৎস হল কলার্ড সবুজ শাক। এক কাপ রান্না করা কলার্ড সবুজ শাক এর মাধ্যে প্রায় ১৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে।

সরিষা পাতা

আপনি কি কখনো সরিষা পাতা খেয়েছন? সরিষা পাতাও কিন্তু ক্যালসিয়ামের ভালো একটি উৎস। এক কাপ রান্না করা সরিষা পাতা সাধারণত প্রায় ১০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ধারণ করে।

তিল

তিল খান নাই এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া হয়তো দুস্কর। এই তিল হল ক্যালসিয়ামের অন্যতম একটি উৎস। এক আউন্স তিল প্রায় ৩৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে।

বাদামী চাল

বাদামী চাল দেখেছেন নিশ্চয়। সত্যিকার অর্থে আমি নিজেও এই চাল খেয়েছি কি না জানি না। এই বাদামী চালও কিন্তু ক্যালসিয়ামের অন্যতম ভালো উৎস। এক কাপ রান্না করা বাদামী চাল প্রায় ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে।

ক্যালসিয়াম যুক্ত ফল

ফল সাধারণত ক্যালসিয়ামের ভাল উৎস নয়। যাইহোক, কিছু ফল আছে যাতে ক্যালসিয়াম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পাওয়া যায়। চলুন তো কোন ফলে কি পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে জেনে আসি।

  • কটি কাপ স্ট্রবেরিতে প্রায় 20 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
  • একটি মাঝারি আকারের কলাতে প্রায় 20 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
  • সাধারণত, একটি মধ্যম আকারের আমতে প্রায় 10 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
  • আপনি একটি মধ্যম আকারের পেঁপেতে প্রায় 15 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাবেন।
  • একটি মধ্যম আকারের কমলাতে প্রায় 30 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
  • সাধারণত, একটি মধ্যম আকারের আপেলে প্রায় 10 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
  • একটি মধ্যম আকারের কাঁঠালে প্রায় 20 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
  • এক কাপ আঙ্গুরে প্রায় 15 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।

আরো পড়ুনঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এর সুবিধা ও অসুবিধা (বিস্তারিত)

এই ফলগুলি আপনার দৈনিক ক্যালসিয়াম চাহিদা শতভাগ পূরণ করতে না পারলেও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে বিশেষভাবে কাজে লাগবে।

ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির উপায়

ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির জন্য, আপনাকে আপনার দৈনিক ক্যালসিয়াম চাহিদা পূরণ করতে হবে। ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির জন্য আপনি নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নিতে পারেন

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান

আপনি যদি ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে ভূগে থাকেন তবে আপনাকে জেনে রাখতে হবে ক্যালসিয়ামের ভালো উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে দুগ্ধজাত খাবার, পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি, সয়াজাতীয় পণ্য, এবং ক্যালসিয়াম-ফর্টিফাইড খাবার। এগুলো নিয়মিত সেবন করুন। দেখবেন আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। 

ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য আপনার শরীরকে সাহায্য করুন

ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে। আপনার ডায়েটে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন বা বিশ্বস্ত এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিন। হয়তো এটি আপনার বিশেষ কাজে লাগবে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রায় ২-৩ লিটার পানি খাওয়া উচিত। আর এই পানি ক্যালসিয়াম শোষণে বিশেষভাবে সহায়তা করে। সুতরাং ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির জন্য আপনাকে নিয়মিত পরিমিত পানি পান করতে হবে।

পর্যাপ্ত ব্যায়াম করুন

কখনো হাতের কিংবা পায়ের হাড়ে ব্যাথা পেয়েছেন? এটা অনেক সময় ব্যায়ামের অভাবে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির জন্য হয়ে থাকে। সুতরাং নিয়মিত ব্যায়াম করুন। কেননা, ব্যায়াম হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

প্রতিদিন দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য খান

ক্যালসিয়াম বৃদ্ধির জন্য আপনাকে দুধ, দই, পনির, বাটারমিল্ক, বা ওয়াটারমিল্ক নিয়মিত খেতে হবে। এগুলো আপনার দৈনিক ক্যালসিয়াম চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণ করতে পারে। সুতরাং নিয়মিত ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খান।

পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি খান

চেষ্টা করবেন নিয়মিত পালংশাক, ব্রকোলি, বাঁধাকপি, এবং অন্যান্য পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি খাওয়ার। কেননা এগুলো হচ্ছে, ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।

সয়াজাতীয় পণ্য খান

টোফু, টেম্পে, এবং অন্যান্য সয়াজাতীয় পণ্য ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। আপনার ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত সয়াজাতীয় পণ্য খেতে পারেন।

ক্যালসিয়াম-ফর্টিফাইড খাবার খান

নিয়মিত ক্যালসিয়াম-ফর্টিফাইড খাবার খেতে পারেন। সয়া দুধ, চালের দুধ, এবং কিছু প্রাতঃরাশের সিরিয়াল ক্যালসিয়াম-ফর্টিফাইড জাতীয় খাবার আপনার ক্যালসিয়াম বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান

ক্যালসিয়াম বাড়ানোর জন্য সামুদ্রিক মাছ, ডিম, এবং মাশরুম বেশি পরিমাণে খেতে পারেন। কেননা এগুলো ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।

ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিন

যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি না পেয়ে থাকেন তবে ডাক্তারের সাথে কথা বলে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহনের চেষ্টা করুন। এগুলো সব ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার। আপনার জন্য বিশেষ কাজে লাগবে বলে আশা করছি।

ক্যালসিয়াম সম্পর্কিত জরুরী প্রশ্ন-উত্তর

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আপনাকে নিয়মিত ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। যদি আপনার শরীরে পুষ্টির মাত্রা বাড়াতে চান তবে আপনার জন্য ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার সেবন করার কোন বিকল্প নেই।

কোন মাছে ক্যালসিয়াম বেশি?

সাধারণত চিংড়ি মাছে আপনি প্রচুর ক্যালসিয়াম পাবে। কেননা, চিংড়িতে প্রতি ১০০ গ্রামে ১৭৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।

শরীরে ক্যালসিয়াম বেশি হলে কি হয়?

হাইপারক্যালসেমিয়া হল রক্ত ​​প্রবাহে অস্বাভাবিকভাবে বেশি ক্যালসিয়াম থাকার অবস্থা। এটি একটি গুরুতর অবস্থা যা হার্টের সমস্যা, কিডনিতে পাথর, এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।

ক্যালসিয়ামের অভাব হলে কি খাওয়া উচিত?

ক্যালসিয়ামের অভাব হলে, ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। এর জন্য দুগ্ধজাত খাবার, বিভিন্ন শাকসবজি এবং ফলমুল খেতে পারেন।

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট কোনটা ভালো?

এটা সম্পূর্ণরূপে বলা সম্ভব নয়। তবে Osteo Bi-Flex, Calcium Plus D, Ostocal D খুবই উপকারী কয়েকটি ট্যাবলেট।

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট কতদিন খেতে হয়?

Calcium ট্যাবলেট কতদিন খেতে হবে তা নির্ভর করে আপনার বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং ক্যালসিয়াম স্তরের লক্ষ্যমাত্রার উপর।

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এর কাজ কি?

ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট হল ক্যালসিয়ামের একটি সম্পূরক, যা মানবদেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি। যাই হউক চলুন ক্যালসিয়াম  এর কাজগুলো এক নজরে দেখে নিন।

আরো পড়ুনঃ মহাকাশ কি – মহাকাশ অভিযান নিয়ে জরুরী কিছু তথ্য

  • হাড় এবং দাঁত গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণ
  • পেশী সংকোচন
  • রক্ত জমাট বাঁধা
  • স্নায়ু সংকেত প্রেরণ

আমাদের শেষকথা

তো প্রিয় পাঠক, ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার সম্পর্কিত আমাদের এই পোস্টটি আপনার কেমন লাগলো আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন প্লিজ। আপনি যদি ক্যালসিয়াম সম্পর্কে বাড়তি তথ্য জেনে থাকেন তবে দয়া করে আমাদেরকেও জানিয়ে দিন। আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য কামণা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ্ হাফেজ।

Author

Leave a Reply