ফ্রন্ট-ইন্ড-ফ্রেমওয়ার্ক

সেরা ফ্রন্ট-ইন্ড ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে জেনে নিন

  • Post author:

ফ্রন্ট-ইন্ড ফ্রেমওয়ার্ক আসলে কি? বন্ধুরা আমরা আজকে ওয়েব ডিজাইনের জন্য অত্যাবশকীয় কয়েকটি ফ্রেমওয়ার্ক সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।

একজন ওয়েব ডিজাইনার হওয়ার জন্য এই ফ্রেমওয়ার্কগুলো আপনাকে ভালভাবে আয়ত্বে আনতেই হবে। তবে সবগুলো ফ্রেমওয়ার্ক আপনাকে হন্তদন্ত হয়ে মুখস্থ করতে হবে না।

সাধারণত একটি ওয়েবসাইট বিল্ড করার জন্য আপনাকে অসংখ্য কোড ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু ফ্রেমওয়ার্ক

ব্যবহারের কারণে আপনাকে কোডিং এ কোন জ্ঞান রাখার প্রয়োজন পড়ে না। আপনি ফ্রেমওয়ার্কের ডিফল্ট কিছু ক্লাস ব্যবহার করেই অনেকগুলো কাজ নিমিষেই সম্পন্ন করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কি – অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ক্যারিয়ার

ধরুন আমি একটি বাটন ক্রিয়েট করতে চাই। নরমালি কোডিং করে যদি বাটনটিকে সাজাতে চাই তাহলে আমাকে যে পরিমাণ কোড লিখতে হবে ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করলে মাত্র একটি ক্লাস ব্যবহারের মাধ্যমেই সুন্দর একটি বাটন ক্রিয়েট করা সম্ভব।

এ কারণেই বর্তমান ওয়েব ডিজাইনাররা ফ্রন্ট-ইন্ড ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ফ্রেমওয়ার্ক আসলে কি?

চলুন জানার চেষ্টা করি।

ফ্রেমওয়ার্ক (Framework)

আপনি নিশ্চয় ফ্রেমওয়ার্ক শব্দটির সাথে পরিচিত। একজন ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে আপনার ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে নিশ্চয় ফ্রেমওয়ার্ক কি তা আপনার জানা।

ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে পূর্বে রেডি করা কিছু ডিজাইন ব্লকের সমাহার যেগুলো পরবর্তীতে শুধুমাত্র কিছু ক্লাস হিসেবে কল করলেই পুরো ডিজাইন পাওয়া যায়।

ফ্রেমওয়ার্ক সাধারণত দুই ধরণের হয়ে থাকে। ফ্রন্ট-ইন্ড ফ্রেমওয়ার্ক এবং ব্যাক ইন্ড ফ্রেমওয়ার্ক। আমাদের আলোচনার বিষয় হচ্ছে ফ্রন্ট-ইন্ড ফ্রেমওয়ার্ক।

তাহলে চলুন জানবেন এটি আসলে কি?

ফ্রন্ট-ইন্ড বনাম ব্যাক-ইন্ড

একটি ওয়েবসাইটের বাহ্যিক লে-আউট যেমন ওয়েবসাইটটি দেখতে কেমন হবে? এর কোন অংশে কি থাকবে, কালার কম্বিনেশন কেমন হবে,

এসব বিষয় নির্ধারণ করে ফ্রন্ট-ইন্ড ডেভেলপমেন্ট এর উপর।

অপরদিকে,

ওয়েবসাইটের একটি বাটন কিভাবে কাজ করবে, কি ধরণের ইফেক্ট থাকবে এর মাঝে? ওয়েবসাইটটিতে কোন পণ্যের সমাহার থাকবে কি না এবং পণ্যগুলো কিভাবে বিক্রির মাধ্যমে পেমেন্ট নেয়া যাবে,

এসব বিষয় নির্ধারণ করবে ব্যাক ইন্ড ডেভেলপমেন্ট। ফ্রন্ট ইন্ড ডিজাইনকে বলা হয় ওয়েব ডিজাইন আর ব্যাক ইন্ড ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট।

ফ্রন্ট-ইন্ড-ফ্রেমওয়ার্ক (Front-End-Framework)

ফ্রন্ট-ইন্ড বলতে সম্মুখের কিছু বোঝায়। যে সকল ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে ওয়েবসাইটের ডিজাইন সম্পন্ন করা হয় তাদেরকে ফ্রন্ট-ইন্ড ফ্রেমওয়ার্ক বলে।

এগুলো ব্যবহার করে ওয়েব ডিজাইন করা হয়ে থাকে তবে ব্যাক ইন্ডের কিছু কাজ করতে হলে এসব ফ্রেমওয়ার্ক কিন্ত ব্যবহার করা যাবে না।

প্রচলিত এবং অধিক জনপ্রিয় দু-একটি ফ্রেমওয়ার্কই আপনার আয়ের জন্য যথেষ্ট হবে। তাহলে জনপ্রিয় কয়েকটি ফ্রন্ট-ইন্ড ফ্রেমওয়ার্কের নাম জানবেন চলুন।

  • Bootstrap (বুটস্ট্র্যাপ)
  • Foundation (ফাউন্ডেশন )
  • UI Kit (ইউআই কিট )
  • iOS (আইওএস )
  • React (রিয়্যাক্ট)
  • Angular JS (অ্যাঙ্গুলার জেএস)
  • Vue.js (ভুজেএস)

বুটস্ট্র্যাপ (BootStrap)

bootstrap

খুব দ্রুত জনপ্রিয় হওয়া ওয়েব ফ্রেমওয়ার্ক হিসেবে যার নাম সবার আগে আসে তা হচ্ছে বুটস্ট্র্যাপ। অত্যন্ত সহজ এবং মানসম্মত বলে ওয়েব ডিজাইনারদের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছে বুটস্ট্র্যাপ।

আরো পড়ুনঃ প্রোগ্রামার নাকি বিসিএস ক্যাডার? ক্যারিয়ার হিসেবে কোনটি বেটার

আপনি কি বুটস্ট্র্যাপ শিখতে চান? একজন ওয়েব ডিজাইনার হবার জন্য আপনার বুটস্ট্র্যাপ শেখাটা অত্যন্ত জরুরী বলে আমি মনে করি।

বর্তমানে বুটস্ট্র্যাপের 5.1 ভার্সন চলমান। অনেক কিছু আপডেট আনা হয়েছে এই ভার্সনে। বুটস্ট্র্যাপ সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকলে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে।

বুটস্ট্র্যাপের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে আপনি প্রি-ডিজাইন করা কিছু টেমপ্লেট, বিভিন্ন কোড স্নিপেট পেয়ে যাবেন একদম বিনামূল্যে।

এগুলো সংগ্রহ করে আপনার প্র্যাকটিজ চালিয়ে যেতে পারেন। তাহলে আপনার ওয়েব ডিজাইনার হওয়া

একটি স্মার্ট কোয়ালিটির ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে বুটস্ট্র্যাপের জুড়ি মেলা ভার। আমরা বুটস্ট্র্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজেই একটি সুন্দর ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে পারি।

সাধারণ কোডিং করে যেখানে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করতে কয়েকদিন লেগে যায় সেখানে বুটস্ট্র্যাপ ব্যবহার  করে ডিজাইন করতে মাত্র কয়েক ঘন্টায় যথেষ্ট।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন কেন আপনি বুটস্ট্র্যাপ ব্যবহার করবেন।

কেন ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করবো?

আমরা সাধারণ এইচটিএমএল সিএসএস ব্যবহার করে যখন কোডিং এর মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট তৈরীর স্বপ্ন দেখে থাকি তখন সেটাকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রায় কয়েকদিন লেগে যায়।

এক্ষেত্রে অনেকেই স্বাভাবিক ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। ওয়েবসাইট তৈরীর যে স্বপ্ন তা স্বপ্নতেই রয়ে যায়। বাস্তবে আর রূপ লাভ করে না।

কিন্তু একটি ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করলে আমরা আমাদের কাঙ্খিত সেই ওয়েবসাইটকে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সফলভাবে ডিজাইন করতে পারে।

এখন আপনিই বলুন এত বেশি সুবিধা থাকা স্বত্তেও আমরা কেন ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করবো না।

তাহলে একজ নজরে চলুন দেখে নেই আমাদের কেন ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করা উচিত?

  • ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে আমরা সময় বাঁচাতে পারি
  • গ্রিড তৈরীর কোন ঝামেলা নেই। আমরা সহজেই কাজটি করতে পারি।
  • কোডগুলো পরিক্ষিত হবার কারণে প্রায় সব ধরণের ব্রাউজারেই এগুলো ব্যবহার করা যায়।

সাধারণ কোডিং এর সাথে ফ্রেমওয়ার্কের ব্যবধানটা কোথায়?

নরমাল কোডিং আর ফ্রেমওয়ার্ক দুটি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। একটি ওয়েবসাইট বিল্ড করার সময় আমরা সাধারণ কোডিং ব্যবহার করলে নরমাল একটি ওয়েবসাইটই প্রায় 3-7 দিন খেয়ে ফেলবে!

অথচ,

এই একই ওয়েবসাইট বিল্ড করার জন্য আমরা যদি কোন ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকি তবে এটি নিশ্চিত করে বলা যায় মাত্র কয়েক ঘন্টায় এর জন্য যথেষ্ট।

সাধারণ কোডিং এর চেয়ে ফ্রেমওয়ার্ক অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য। কেননা সেখানে অনেক কোডিং পূর্ব থেকেই লিখা থাকে।

যে কারনে ভুল হবার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। শুধুমাত্র কয়েকটি ক্লাস ব্যবহারের মাধ্যমেই পুরো একটি ডিজাইন পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ ক্যারিয়ার হিসেবে ওয়েব ডিজাইন নাকি ব্লগিং কোনটা?

অথচ সাধারণ কোডিং এ একটি বাটন তৈরী করতে গেলেও আমাদের অনেক লম্বা লাইনের কোড লিখতে হয়। ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে কাজটি করলে মাত্র একটি ক্লাস ব্যবহার করলেই চলে।

তো প্রিয় পাঠক,

আশা করি বুঝতে পারছেন, কেন আপনি ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করবেন।

তাহলে কোনটি শেখব ফ্রন্ট-ইন্ড ডেভেলপমেন্ট শিখবো নাকি ব্যাক ইন্ড?

এখন এটি তো আপনি নিজেই ডিসিশন নিবেন যে ফ্রন্ট-ইন্ড শিখবেন নাকি ব্যাক ইন্ড?

পরিশেষে একটি কথা বলা যায় যে,

আমরা যে সব ফ্রন্ট-ইন্ড ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকি সেগুলোর মধ্যে বুটস্ট্র্যাপ React (রিয়্যাক্ট), Angular JS (অ্যাঙ্গুলার জেএস), Vue.js (ভুজেএস) অনেক বেশি জনপ্রিয়।

Author

Leave a Reply