মেটাভার্স-সম্পর্কে-জানুন

মেটাভার্স কি? মেটাভার্স ও ভবিষ্যৎ দুনিয়া

মেটাভার্স কি বর্তমান সময় এমন চাঞ্চল্যকর কথা হরহামেশায় শুনতে পাওয়া যায়! তাহলে সত্যিকার অর্থে কি এই মেটাভার্স? চলুন আজকের আর্টিকেল থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক –

কল্পনা করুন এমন একটি পৃথিবীর যেখানে আপনার মৃত্যুর পর আপনার সন্তান চাইলেই আপনার সঙ্গে ভার্চুয়ালি যোগাযোগ করতে পারবে।

আপনার সঙ্গে সময় কাটাতে পারবে যেকোনো মুহূর্তে।‌‌ অথবা কল্পনা করুন এমন এক ভার্চুয়াল জগতের যেখানে মানুষ কাজ করবে, কেনাকাটা করবে কিংবা খেলাধুলা করবে সম্পূর্ণ বাস্তবের মতোই। 

কি অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন এ আবার কোন রূপকথার গল্প? কিন্তু সত্যি বলতে এসব কোনো রূপকথার গল্প কিংবা বৈজ্ঞানিক কল্প-কাহিনী নয়।

অদূর ভবিষ্যতে আমরা এমন এক পৃথিবীর মুখোমুখি হতে চলেছি যেখানে আমাদের সমস্ত কল্পনা বাস্তবে রূপ নেবে। 

আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করবে যে প্রযুক্তি তার নামই হলো মেটাভার্স। মেটাভার্স (Metaverse) বিজ্ঞানের এমন এক ভৌতিক আবিষ্কার যা অনলাইনে ভার্চুয়াল জগতকে সম্পূর্ণ বাস্তব পৃথিবীতে রূপান্তর করতে সক্ষম হবে।

কিন্তু কিভাবে? চলুন তাহলে মেটাভার্স সম্পর্কে সব অজানা তথ্য খুঁজে নেওয়া যাক আজকের আর্টিকেল থেকে। 

মেটাভার্স কি?  

Metaverse কি এই বিষয়ে জানতে হলে প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে “মেটাভার্স” শব্দটি আসলে কি।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের শীর্ষ দর্শনীয় স্থান – সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান

মেটাভার্স শব্দটি মূলত গ্রিক শব্দ “মেটা” এবং ইংরেজি শব্দ “ইউনিভার্স” এর একটি সমষ্টিগত রূপ। 

এখানে মেটা শব্দের অর্থ হল গন্ডির বাইরে এবং ইউনিভার্স অর্থ হল জগৎ। অর্থাৎ মেটাভার্স হল প্রচলিত বিশ্বের বাইরের একটি জগৎ।

এটি এমন একটি 3D ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড যেটি বাস্তব বিশ্বকে কল্পনার জগতের সঙ্গে যুক্ত করতে সক্ষম। 

প্রযুক্তিবিদদের ভাষায়, মেটাভার্স হল ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ। অর্থাৎ এমন একটা সময় আসবে যখন মেটাভার্সই ইন্টারনেটকে রিপ্লেস করবে।

আপনি যদি আজকের ফাইভ-জি জগতকে অতীতের ওয়ান-জির সঙ্গে তুলনা করেন তাহলে খুব সহজেই ইন্টারনেট এবং মেটাভার্সের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন।

মেটাভার্স এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে আপনি আপনার স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতে আটকে থাকবেন না বরং স্মার্টফোনের ভেতরের জগতটাকে সরাসরি অনুভব করতে পারবেন।

আর এটি সম্ভব হবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (VR), অগমেন্টেড রিয়ালিটি (AR), আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI), আইওটি (IoT) এবং blockchain-এর মতো অনেকগুলো প্রযুক্তির সমন্বয়ে। 

আর এই প্রযুক্তিগুলোর মাধ্যমে মেটাভার্স পরিণত হবে একটি প্যারালাল ইউনিভার্সে। যেখানে মানুষ নিজের থ্রিডি অ্যাভাটারের মাধ্যমে একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করা সহ সবধরনের কাজ করতে পারবে।

তবে এই ইউনিভার্সের কোন বস্তুগত অস্তিত্ব নেই। এর সমস্তই ভার্চুয়াল। এখানে একজনের আইডেন্টিটি যেমন ভার্চুয়াল তেমনি রয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে অর্থ, সম্পত্তিসহ সকল কিছু। 

মেটাভার্সের ইতিহাস

মেটাভার্স কথাটি সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয়তা পেলেও এর ধারণা মূলত বেশ কয়েক দশক পুরোনো।‌

প্রায় ৩২ বছর পূর্বে অর্থাৎ ১৯৯২ সালে আমেরিকান কল্পবিজ্ঞান লেখক নিল স্টিফেনসন তাঁর “স্নো ক্রাশ” উপন্যাসে মেটাভার্স শব্দটি ব্যবহার করেন। 

তিনি তাঁর বইতে বলেন, “মেটাভার্স হলো একটি ভার্চুয়াল 3D জগৎ, যেখানে ব্যবহারকারীরা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) হেডসেট ব্যবহার করে যোগাযোগ করতে, খেলতে এবং কাজ করতে পারবে।”

তবে তাঁর এই ধারণাটি ৯০-এর দশকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং কম্পিউটার গেমিং প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সাথে সাথে পরিচিতি লাভ করে।

এরপর ২০০০-এর দশকে, Virtual Reality প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়। সাথে ২০১২ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সফল ভিআর হেডসেট Oculus VR চালু হয়।

এরপর 2016 সালে পিসিভিআর এবং এইচটিসি ভাইভ নামে আরও দুটি VR হেডসেট জনপ্রিয়তা লাভ করে। 

এভাবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির সাথে সাথে মেটাভার্স নিয়েও ভাবতে শুরু করেন প্রযুক্তিবিদরা।

ফলস্বরূপ ২০১৭ সালে ফেসবুক অকুলাস VR-কে দুই বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে কিনে নেয় এবং মেটাভার্স সম্পর্কে তাদের আগ্রহের জানান দেয়। 

পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৩ অক্টোবর মার্ক জাকারবার্গ Facebook Inc-এর নাম পরিবর্তন করে ‘Meta Platforms Inc.’ বা সংক্ষেপে ‘Meta’ নামকরণ করেন।

জানা যায় মেটাভার্স সম্পর্কে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা থেকেই এই নামকরণ করে সংস্থাটি। 

মেটাভার্স কিভাবে কাজ করবে? 

মেটাভার্স যেহেতু এখনও একটি উন্নয়নাধীন প্রযুক্তি, তাই এটি কিভাবে কাজ করবে সে সম্বন্ধে এখনই বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।

তবে ফেসবুক ইতোমধ্যে মেটাভার্স নিয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। সেই অনুযায়ী ফেসবুকের পরিবর্তীত মেটাভার্স দুনিয়ার নাম হবে ‘হরাইজন।’ যেখানে যুক্ত হবে একাধিক মেটাভার্স ফিচারস। 

১। হরাইজন ওয়ার্ল্ডস (Meta Horizon Worlds) 

হরাইজন ওয়ার্ল্ডস হবে এমন একটি মাল্টিপ্লেয়ার ভার্চুয়াল জগৎ যেখানে একাধিক ব্যবহারকারী একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে, আড্ডা দিতে এবং খেলাধুলা করতে পারবে।

এখানে প্রত্যেকটি ব্যবহারকারীর একটি ভার্চুয়াল অবতার থাকবে এবং পরিবেশ হবে একটি ঘরের ভার্চুয়াল পরিবেশের মতোই। 

২। হরাইজন ওয়ার্করুমস (Horizon Workrooms) 

হরাইজন ওয়ার্করুমস হলো একটি ভার্চুয়াল মিটিং স্পেস। এটি এমন একটি স্থান যেখানে আপনি এবং আপনার সহকর্মীরা পৃথিবীর যেকোনো জায়গা থেকে একসাথে কাজ করতে পারবেন।

এতে রয়েছে ওকুলাস avatars, Meta Quest VR headset, ভার্চুয়াল প্রেজেন্টেশন রুম, ডিসকাশন রুম, রাউন্ড ডেস্ক, হ্যান্ড ট্রাকিং এবং ভার্চুয়াল হোয়াইট বোর্ড।

এর মাধ্যমে ভার্চুয়াল অফিসেই আপনি বাস্তবের মত প্রয়োজনীয় সবকিছু ব্যবহার করতে পারবেন। 

৩। হরাইজন ফিটনেস (Horizon Fitness) 

কেমন হতো যদি আপনার ঘরের মধ্যেই একটি ভার্চুয়াল জিমনেশিয়াম তৈরি হয়? হ্যাঁ মেটাভার্স এই অসম্ভবকেও সম্ভব করতে চলেছে।

ভার্চুয়াল ওয়ার্কআউট অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ঘরের মধ্যে করতে পারবেন রেগুলার এক্সারসাইজ। প্রয়োজন শুধু ওকুলাসের VR headset এবং বক্সিং গ্লাভস। 

৪। গেমিং (Gaming)

গেমিং আরও একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মেটাভার্স ফিচার। এর মাধ্যমে একাধিক ব্যবহারকারী ভার্চুয়াল বিশ্বে উপস্থিত হয়ে থ্রিডি গেমিং এক্সপেরিয়েন্স করতে পারবে। 

মেটাভার্স কি কি ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে পারে? 

মেটাভার্স যে ভবিষ্যৎ দুনিয়ায় এক অভাবনীয় পরিবর্তন আনতে চলেছে তা এখন সহজেই অনুমেয়।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই মেটাভার্সের প্রভাব সুনিশ্চিত। 

চলুন তাহলে আলোচনার এ পর্যায়ে মেটাভার্সের সম্ভাব্য প্রভাবগুলি সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

যোগাযোগ

মেটাভার্স প্রযুক্তি তার ব্যবহারকারীদের পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে একে অন্যের সঙ্গে ভার্চুয়ালভাবে যোগাযোগ করতে সাহায্য করবে।

এর কল্যাণে ভার্চুয়াল মিটিং এবং ভিডিও কনফারেন্সগুলি আরো বেশি বাস্তব এবং আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। 

উদাহরণস্বরূপ, আপনি ঢাকা বসেই ফ্রান্সের একটি রাস্তা যেমন দেখতে পারবেন তেমনি এতে চলাচলের অনুভূতিও অনুভব করতে পারবেন।

এমনকি লন্ডনে বসবাসকারী কোনো আত্নীয়ের বাসায় ঘুরতে যেতে পারবেন, আড্ডা দিতে পারবেন এবং সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে পারবেন। 

বিনোদন

মেটাভার্স বিনোদন জগতে যে একটি বড়সড় পরিবর্তন আনতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। ভার্চুয়াল বিশ্বে খেলাধুলা করা, শিল্প তৈরি করা সহ মুভি দেখা কিংবা কনসার্টে অংশ নেওয়ার মতো বিষয়গুলো হবে আরও বেশি আকর্ষণীয়, সহজ ও বাস্তব। 

ব্যবসা

ধরুন কোনো এক কোম্পানি একটি নতুন পণ্য বা পরিষেবা চালু করল। এরপর সে পণ্যটি ভার্চুয়ালি লঞ্চ করল। যাতে করে গ্রাহকগণ সেটি ফিজিক্যালি ক্রয় করার পূর্বে ভার্চুয়ালি ট্রাই করে এর অভিজ্ঞতা নিতে পারে। বিষয়টি কেমন হয় বলুন তো? VERY MUCH INTERESTING, RIGHT? 

হ্যাঁ, মেটাভার্স ব্যবসাক্ষেত্রে ঠিক এরকম পরিবর্তনগুলোই নিয়ে আসতে চলেছে। এটি ই-কমার্স, ট্রেনিং এবং গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করবে। 

শিক্ষা

শিক্ষাক্ষেত্রে মেটাভার্সের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এর কল্যাণে শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই বাস্তব বিশ্বের অভিজ্ঞতাগুলো ভার্চুয়ালভাবে অনুভব করতে পারবে।

উদাহরণস্বরূপ, ক্লাসরুমে বসেই মহাকাশ ভ্রমণ করা, প্রাচীন রোম বা ভার্চুয়াল জাদুঘর পরিদর্শন করা যাবে।

আবার বাসায় বসেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষকের ক্লাসে সরাসরি যোগদান করা যাবে। মনে হবে যেন আপনি শিক্ষকের সামনে বসেই তার লেকচার শুনছেন। 

মেটাভার্সের মাধ্যমে ‘আশ্চর্য এক দুনিয়া’ দেখবে মানুষ! কি সেই দুনিয়া 

আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে মেটাভার্সের মাধ্যমে মানুষ যে এক আশ্চর্য দুনিয়া দেখতে চলেছে সেই দুনিয়ার কথা হয়তো আমরা কেউ কোনদিন কল্পনাও করিনি।

মেটাভার্স এমন একটি ভার্চুয়াল দুনিয়া হবে যেখানে আপনি অনলাইনে যেকোনো কিছু ধরতে, দেখতে, খেতে, স্বাদ নিতে কিংবা ঘ্রান নিতেও পারবেন। 

এই দুনিয়ায় মানুষের বাস্তব দুনিয়ার দেহের অনুরূপ একটি ভার্চুয়াল অবতার তৈরি করা হবে।

আর এই ভার্চুয়াল দেহটি একটি ভিআর হেডসেটের মাধ্যমে আপনার মস্তিষ্কে সংযুক্ত থেকে আপনাকে অনুভূতির জানান দিবে। 

ধরুন অনলাইনে আপনার একটি পোশাক পছন্দ হলো। এখন এই পোশাকটি আপনি আপনার ভার্চুয়াল দেহে পরিধান করে দেখতে পারবেন যে আপনাকে কেমন দেখতে লাগছে।

একইভাবে বিশ্বের যেকোন প্রান্তে বড় বড় স্টেডিয়ামগুলোতে যেয়ে বন্ধুদের সাথে খেলতে, আড্ডা দিতে, ঘোরাঘুরি করতে, এমনকি সমুদ্রে সার্ফিংও করতে পারবেন। 

আবার আমরা যদি পূর্বের উদাহরণটি টেনে আনি যেমন- মনে করুন আপনার মৃত্যুর পর আপনার সন্তান আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাচ্ছে।

তখন কি হবে? তখন মেটাভার্সে থাকা আপনার অ্যাভাটার আপনার রিয়েল টাইমের কার্যক্রমের উপর নির্ভর করে আপনার কন্ঠে আপনার সন্তানের প্রশ্নের উত্তর দেবে। 

এভাবে মেটাভার্স দূরবর্তী যোগাযোগকে আরো সহজ এবং ব্যক্তিগত করে তুলবে। একইভাবে শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রেও বিপ্লব আনতে পারে। 

মেটাভার্স, রিয়েলিটি ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি 

একটা সময় ছিল যখন মানুষ স্বর্গ ও মর্তের বাইরে আর কোন দুনিয়ার কথা চিন্তাও করেনি। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতি সাধনের ফলে বিষয়টি অন্যরকম হয়ে গেছে।

বর্তমান বাস্তব জগতের পাশাপাশি আরও দুটি জগৎ যেমন- মেটাভার্স এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির দরজা মানুষের সামনে উন্মুক্ত হতে চলেছে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সঙ্গে কমবেশি পরিচিতি থাকলেও মেটাভার্স কথাটি সাধারণ মানুষের জন্য একদমই নতুন। 

তাই চলুন জেনে নেয়া যাক মেটাভার্স, রিয়েলিটি এবং ভার্চুয়ালিটির মধ্যে পার্থক্য কি কি। 

মেটাভার্স  রিয়েলিটি  ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
মেটাভার্স হলো একটি ভার্চুয়াল জগৎ যেখানে মানুষ থ্রিডি অবতারের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে, কাজ করতে এবং শিখতে পারে। অপরদিকে রিয়েলিটি হলো আমাদের চারপাশের বস্তু বা সত্যিকারের জগত। আর ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হল বাস্তব জগতের আংশিক কৃত্রিম সংস্করণ। 
একটি সম্পূর্ণ নতুন বাস্তবতা যা বাস্তব জগতের সঙ্গে মার্জ করে তৈরি করা। এটি বাস্তব জগত যার বস্তুগত অস্তিত্ব রয়েছে।  একটি কম্পিউটার-সৃষ্ট জগত। 
মেটাভার্স ত্রিমাত্রিক। দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক। দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক।

ভবিষ্যৎ অনলাইন প্রযুক্তি মেটাভার্স; আশির্বাদ না অভিশাপ?

মেটাভার্স আশীর্বাদ হবে না অভিশাপ হবে তা এখনো বলা মুশকিল। তবে এটি এমন একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি যা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ৭০ শতাংশ পরিবর্তন করে দিতে সক্ষম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

কিন্তু অন্যান্য প্রযুক্তির ন্যায় মেটাভার্সের ইতিবাচকতা এবং নেতিবাচকতা নির্ভর করবে এটি কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে তার উপর।

  অর্থাৎ এটি যদি শিক্ষা, যোগাযোগ এবং কর্মক্ষেত্রকে আরো বেশি গতিশীল এবং কার্যকর করে তুলতে সক্ষম হয় তবে এটি আশীর্বাদ হতে পারে। 

অন্যথায় এটি যে মানব জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে না তার কোন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তর সমূহ

মেটাভার্স সম্পর্কে তো অনেক কিছুই জানলাম। চলুন আলোচনার এ পর্যায়ে মেটাভার্স সম্পর্কে আরও কয়েকটি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর জেনে নেই। 

মেটাভার্স নিয়ে কোন কোন জনপ্রিয় ব্র্যান্ড কাজ করছে? 

বিশ্বের বাঘা বাঘা কোম্পানিগুলো যেমন ফেসবুক, Vans, Nike, মাইক্রোসফট, Google, Disney, অ্যাপল,  Adidas এবং বিভিন্ন গেমিং প্রতিষ্ঠান যেমন- রওব্লক্স ও এপিক গেমস মেটাভার্স নিয়ে কাজ করছে।‌

আপনার জন্য রিকমেন্ডেড!

Cyber Security & Ethical Hacking | সম্পর্কে জানেন কী?

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি? কেন, কিভাবে? (জানুন বিস্তারিত)

Chat GPT বিস্ময়কর এক আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর নাম!

রোবটিক্স তথা রোবট বিজ্ঞান কি? কেন, কিভাবে?

মেটাভার্সে তথ্যের সুরক্ষা থাকবে তো?

মেটাভার্সে তথ্যের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা সম্পর্কে এখনো কিছু জানা না গেলেও এটি যে ব্যবহারকারীদের আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে তাতে কোন সন্দেহই নেই। 

শেষ কথা

মেটাভার্স এখনো একটি উন্নয়নে দিন প্রযুক্তি কিন্তু এর সম্ভাব্যতা বিশাল। যেখানে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে।

কিন্তু সাম্প্রতিককালে কিছু কিছু কোম্পানি মেটাভার্স থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিতেও দেখা যায়।

যেমন ২০২৩ সালের শুরুর দিকে মাইক্রোসফট এবং ডিজনি উভয় কোম্পানি ঘোষণা দেয় যে তারা তাদের নিজ নিজ মেটাভার্স ইউনিটগুলো বন্ধ করে দিতে চলেছে। 

কিন্তু তার মানে এই নয় যে মেটাভার্সের ভবিষ্যৎ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ এবং রিয়েলিটি ল্যাবসের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রো বোসওর্থ-এর মতে আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যেই মেটাভার্স পরিপূর্ণতা লাভ করতে চলেছে। 

যাইহোক, আমরা কেউই এখনো নিশ্চিতভাবে বলতে পারব না ভবিষ্যৎ কি। কিন্তু একটা বিষয় নিশ্চিত যে এটা আর কল্পবিজ্ঞান নয়। IT’S HERE. 

Author

  • আতকিয়া ফারিহা

    আসসালামু আলাইকুম।। আমি আতকিয়া ফারিহা, একজন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ আর্টিকেল রাইটার ও গবেষক। চার বছরের অধিক সময় যাবৎ বিভিন্ন বিষয়ের উপর তথ্যবহুল এবং এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে আসছি। তবে টেকনোলজি, সাইন্স, মেকানিজম এবং টিউটোরিয়াল আর্টিকেলের ক্ষেত্রে বিশেষ অভিজ্ঞতা আছে। সেইসাথে বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় আর্টিকেল লেখার সমান দক্ষতা রয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। নতুন নতুন বিষয় শিখতে, জানতে এবং তা অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভালোবাসি বলেই রাইটিং আমার নেশা এবং পেশা। আর এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম নিত্যটিউন এর সঙ্গে পথ চলা...

Leave a Reply